
শফিউল করিম সবুজ। কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
চকরিয়া উপজেলার পৌর শহরের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটাকে সামনে রেখে টোকাই শ্রেণীর ছিনতাইকারী কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রোজাদার পথচারী, ক্রেতা-বিক্রেতারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। যেকোনো সময় বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দোকানদারেরা।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা থেকে পৌর শহরে এসে দলবদ্ধভাবে ঘোরাফেরা করে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের ব্যস্ততম এলাকা যেমন- সরকারি হাসপাতাল, নিউমার্কেট, আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স, বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, হাই স্কুল সড়ক, চিংড়ি চত্বর, সবুজ বাগ, থানারাস্তা মাথায়, বাস স্টেশন, জনতা শপিং এলাকায় তাদের বিচরণ করতে দেখা যায়।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মোটরসাইকেলে বা দলবদ্ধভাবে থেকে সুযোগ মতো সুকৌশলে অপরাধ ঘটিয়ে সটকে পড়ে। তাদের কবলে পড়ে পৌর এলাকার অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন। ইতঃপূর্বে রক্তপাতের ঘটনাও ঘটেছে। কেউ তাদের প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে গোপনে লুকিয়ে রাখা দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দেখিয়ে সটকে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ফাঁকি দিয়ে এবং কেউ কেউ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দাপট দেখাতেও কার্পণ্য করে না।
এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দিনে দুপুরে পথচারীদের মোবাইল, হ্যান্ডব্যাগ চিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। এ সব বখাটে, চিনতাইকারী, সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
চকরিয়া জনতা শপিং এর ব্যবসায়ীরা জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের অনেকের নামে মামলাও আছে। এসব বখাটে কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে তাদের চুলের বাহার, প্যান্টের ডিজাইন, চালচলন এবং কথা বলার স্টাইল দেখে সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব। সাতকানিয়ার একজন ব্যবসায়ী বলেন, কিশোর বয়সের অনেকেই ঈদের ছুটি কাটাতে বাড়িতে এসে বন্ধুদের সাথে শপিং মলে একজোট হয়ে মেয়েদের ইভটিজিং করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান।
পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ ও যুবলীগ নেতা আজিজুল হক বলেন, ঈদের কেনাকাটা যতই জমে উঠছে, তাদের তৎপরতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরা বিভিন্ন মার্কেটে পরিকল্পিতভাবে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া বাধানোর চেষ্টায় থাকে। সেই সাথে সুযোগ বুঝে সর্বস্ব লুটপাট চালিয়ে যায়।
অনেকে আবার রাজনৈতিক দলের বা নেতাদের নাম ব্যাবহার করে দাপট চালায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পৌর প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান এলাকাবাসী।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, তাদের অপতৎপরতা বন্ধে পুলিশি টহল সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। খবর পেলেই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছে। তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশকে জানানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।