বন্যার প্রভাবে চকরিয়ার সবজি বাজারে আগুন,ক্রেতাদের নাগালের বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোঃ নাজমুল সাঈদ সোহেল
চকরিয়া (কক্সবাজার)প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের চকরিয়ায় টানা নয় দিনের বন্যার পানিতে সব ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।গত ৬ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত হওয়া টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ডুবে যায় চকরিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়ে লাখো মানুষ। বন্যার সময় উপজেলার বেশির ভাগ সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় সহস্রাধিক কৃষক।বন্যা পরিস্থিতির পূর্ব সময়ের প্রায় পাঁচ গুণ বেশি দামে সবজি কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাসাধারণের।
চকরিয়া পৌরশহরের কাঁচাবাজারে বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেও প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। কিন্তু এখন বিক্রেতারা প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম চাইছেন ২৫০ টাকা। আকাশচুম্বী দাম শুনে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। মরিচের পাশাপাশি দাম বেড়েছে অন্যান্য সবজিরও। প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ৫০-৫৫ টাকা, করলা ৭০ টাকা, বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৫৫ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, গাঁজর ৮০ টাকা ও টমেটো ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চকরিয়া পৌরশহরের চিরিংগা কাঁচাবাজারের সবজি ব্যাবসায়ী বশির আহমদ বলেন,ইতিমধ্যে টানা বন্যার কারণে চকরিয়ার প্রান্তিক কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।যেখানে চকরিয়ার বিস্তৃীর্ণ এলাকা হতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি সরবরাহ করা হত সেখানে চকরিয়ার জনসাধারণের সবজির চাহিদা মেঠাতে পাশ্ববর্তী পার্বত্য অঞ্চল লামা আলীকদম হতে উপজাতীয়দের জুম ক্ষেত হতে সরবরাহ করতে হচ্ছে। তাও চাহিদার তুলনায় নগন্য বল্লেই চলে। তাই সবজি বাজার আগুনে মত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবজি ব্যাবসায়ী সমিতির নেতারা বলেন, বাজার তদারকি করেও দাম বৃদ্ধি ঠেকানো যাচ্ছে না। বন্যায় ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিক্রেতাদেরও বাধ্য হয়ে বেশি দামে ফসল বিক্রি করতে হচ্ছে।আগে চকরিয়ার সবজি কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের আড়তে যেত। অথচ এখন আড়তে সবজি আসছে লামা ও আলীকদম থেকে। বন্যার কারণে চকরিয়ার বেশির ভাগ ক্ষেতের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে সবজি চড়া দামে বিক্রি করতে হচ্ছে ।
সবজি বাজারে ক্রেতা তামিম বলেন, সবজির দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। ৬০টাকার নিচে কোন সবজি নেই বল্লেই চলে।বন্যার আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছিল ৫০-৬০ টাকায়। বন্যার পর সেই মরিচের দাম গিয়ে ঠেকেছে কেজি প্রতি ২৫০ টাকায়। আমাদের মত সাধারণ ত্রেতারা অনেকে সবজি কেনা থেকে বিরত রয়েছেন।আজকে শুধুমাত্র মাছ নিয়ে ঘরে ফিরছি। কেননা এক কেজি সবজির মূল্য দিয়ে দেড় কেজি চাউল পাওয়া যায়।তাই আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের হিসাব করে বাজার না করলে অনেকটা সংসারে বেগ পোহাতে হয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমনের বীজতলা থেকে শুরু করে সব সবজি ক্ষেত সপ্তাহ খানিক পানির নিচে ছিল। তবে সবজির বাম্পার ফলন হওয়ার পরে ও টানা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে সবজি চাষিদের।ফলে সবজি বাজারে অত প্রভাব পড়ার মূল কারণ বলে তিনি জানান।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত