
ফরিদ বাবুল, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিতদের জোরপূর্বভাবে প্রত্যাবাসন করা হবে, এমন গুজব আর অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি কূ-চক্র মহল। তারই সুত্রে ধরেই ১৮ আগষ্ট রোববার সকালে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোড়া শালবন, লেদা ও নয়াপাড়াসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের সিআইসি সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে।
এতে ক্যাম্পের চেয়ারম্যান, টিম লিডার, হেড মাঝি, বল্ক মাঝি ছাড়াও মাষ্টার, ইমাম ও মুরব্বিসহ এনজিও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোড়া এলাকার শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রত্যাবাসন নিয়ে গুজব আর অপপ্রচার রোধে ক্যাম্পের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে। টেকনাফের নয়াপাড়া ও শালবন রোহিঙ্গা (২৬-২৭) ক্যাম্পের ইনচার্জ ইনচার্জ মোহাম্মদ খালেদ হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে আমরা একটি বৈঠক করেছি। বৈঠকে তাদের বিভিন্ন সমস্যা কথা শুনেছি। বিশেষ করে প্রত্যাবাসন নিয়ে যাতে ক্যাম্পে গুজব, অপপ্রচার মাধ্যমে মানুষের মাঝে ভয়-ভীতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার জোরকরে কাউকে মিয়ানমার ফেরত পাঠাবে না, সেটি তাদেরকে আশ্বাস করা হয়েছে। তাদের যাতে ভাল হয় সরকার সেই বিবেচনায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’ বৈঠকে উপস্থিত রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, ‘হঠাৎ প্রত্যাবাসন নিয়ে রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন-তো বটেই, এমনকি ভয়-ভীতির মধ্যে রয়েছে অনেকে, বিষয়টি সেখানে তুলে ধরা হয়েছে। বৈঠকে ক্যাম্পের কর্মকর্তারা ২২ আগষ্ট প্রত্যাবাসন বিষয়টি তুলে ধরেন। প্রত্যাবাসন নিয়ে যাতে কোন প্রকার গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সরকার কাউকে জোর করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবে না বলেও আশ্বাস দেয় উপস্থিত কর্মকর্তারা। রোহিঙ্গা নেতারা সেখানে বলেছেন, যেদেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে এসেছি, সেই দেশে কিভাবে যাবো! আবারো কি নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরে আসবো এদেশে? গোপনে কি প্রত্যাবাসন হতে পারে না, তাই প্রত্যাবাসন বিষয় নিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করার দাবি জানান তাঁরা। টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘প্রত্যবাসন বিষয়ে ক্যাম্পে যাতে কোন ভূল তথ্য প্রচার না করে, সেজন্য সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছে সিআইসি। ক্যাম্পে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না ঘটে, জড়ো হয়ে লোকজনকে আলোচনা অথবা বৈঠক থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ক্যাম্পের লোকজনকে সর্তক করা হয়েছে। প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৫ এর টেকনাফ ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. মির্জা শাহেদ মাহতাব (এক্স), পিপিএম, বিএন জানান, সরকারের নির্দেশে ক্যাম্পে টহল দিয়ে যাচ্ছে র্যাব সদস্যরা। এছাড়া প্রত্যাবাসন নিয়ে ক্যাম্পে কোন গুজব ছড়াতে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে গুজবকারিরদের আইনি ব্যবস্থা নিতে সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়ান্দারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে র্যাবের এই কর্মকর্তা।’