
বিশু তনচংগ্যা
হাতে আর পায়ে অাঙ্গুলের নখ অনেক লম্বা, নখের ভিতরে কেমন একটা আয়রন জমেছে। দুইএক মাসে কখনো একবারও গোসল হয়না।
হাত পা নারাছাড়া করা যায়না করলে প্রচুর ব্যাথা। চিকিৎসা কিংবা ঔষুধ খাওয়া দুরের কথা দৈনিক ঠিকমতো দুইবেলা খাবারও জুটে না। এভাবে মৃত্যুর যন্ত্রনায় আজ দীর্ঘ পাচঁ(৫) বছরেও বেশি এক বিছানায় ঘুমিয়ে, খেয়ে, উঠে বসে, মুলত্যাগে দিন পার করে যাচ্ছে কাপ্তাইয়ে রাইখালী ইউনিয়স্থে তিনছড়ি গ্রামের বাসিন্দা স্নেহ কুমার তনচংগ্যা(৫০)।
একটা সময়ে স্ত্রীসহ দুইকন্যা সন্তান ও দুইপুত্র সন্তানকে নিয়ে সুখী সংসার জীবন যাচ্ছিল তার। পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ-ভাটয়ারী পেয়ে যা ছিলো সেখানে চাষাবাদে আয়ে কিংবা দিন মজুরের রোজগার।
– একদিন স্নেহ কুমারের স্ত্রী অন্যপুরুষের সাথে পরকিয়া তালে বসে নিজের সব সন্তানকে নিয়ে চুরি করে পালিয়ে যায়। সন্তানরা যেহেতু খুব কম বয়সী তাই সবাই মায়ের সাথে চলে যেতে বাধ্য হন। কিন্ত স্নেহ কুমার সেই বিষয়ে কোন আদালতে বিচারের নালিশ করেনি। এমনতায় নিজের ঘরবাড়ি ছাড়া অন্য ঘরে ঘরে দৈনিক মজুরী মাধ্যমে নিজেই একা কয়েক বছর পার করতে লাগলেন।
একদিন হঠাৎ মারাত্মাক অসুস্থ হয়ে পরলে উন্নত চিকিৎসার অভাবে তখন থেকেই আর বিছানা হতে উঠতে পারেনি অবধি পর্যন্ত। তার আত্মীয় কয়েক পরিবার মিলে একটি ছোট বাশেঁর বেড়ার কক্ষ বানিয়ে তাকে সেখানে রাখে।
– পিতার এমন অবস্থা খবর তার সন্তানগন জানতে পারলে তার পুত্রের বড় সন্তান ১৫ বয়সী রুবেল তনচংগ্যা ছুটে আছে বাবাকে লালন পালন করতে। বর্তমানে সেই কম বয়সী ছেলেটি যার বেশির ভাগ বন্ধুদের সাথে খেলাধুলায় উর্ত্তীণ মন মানসিক একমাত্র তিনি নিজের এমন অসুস্থ বাবাকে দৈনিক মজুরী করে সেবা করে যাচ্ছে খাদ্য, টাকা পয়সা, কাজ, চিকিৎসা, ইত্যাদি বিভিন্ন কারণ, সমস্যা সাথে নিয়ে।