দেশের একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন কেবল উন্নয়নেরই নয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও বিশ্বে একটি রোল মডেল দেশ। এ দেশের একজন মানুষও গৃহহারা থাকবে না। রোববার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় দেশের ১৪ জেলায় ১০০টি বহুমুখি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ১১ হাজার ৬০৪টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসস
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ বি তাজুল ইসলাম এবং সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ‘দুর্যোগসহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় দুজন ‘দুর্যোগসহনীয় বাসগৃহ’ প্রাপ্ত ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার শিউলী রানী শিল এবং কুড়িগ্রামের মো. শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সেরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এ বছর ৮২ জনকে ‘সিপিপি’ পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তিনজনের হাতে সম্মাননা তুলে দেন। তাঁরা হলেন কক্সবাজারের চকোরিয়ার বুলবুল জান্নাত, ভোলার লালমোহনের এ কে এম কামরুল ইসলাম এবং খুলনার মোংলার সুস্মিতা মণ্ডল।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের সরকার দুর্যোগ প্রশমনে কাজ করে যাচ্ছে। দিন দিন দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। আমরা মানুষকে সচেতন করতে পেরেছি।’ দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্নিনির্বাপণে যেন ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস পায়, সেজন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়ার ইতোমধ্যে তা আমরা নিয়েছি, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর জুলাই মাসে ঢাকায় গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশনের সভা হয়েছে। সেখানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র-ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ‘দুর্যোগ-ঝুঁকি হ্রাসকরণ’ সম্পর্কিত জাতিসংঘের অফিস থেকে প্রণীত এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বিল্ড টু লাস্ট’র আলোকে ‘নিয়ম মেনে অবকাঠামো গড়ি, জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করি’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের সামগ্রিক লক্ষ্য ও কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। আমরা যা কিছু তৈরি করব, আমাদের মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। কাজেই সেই দুর্যোগে মানুষের ক্ষতি যেন না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর জুলাই মাসে ঢাকায় গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশনের সভা হয়েছে। সেখানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র-ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের উল্লেখ করে যেকোনো ধরনের দুর্যোগের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ আসুক আর প্রাকৃতিক দুর্যোগই আসুক, সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত থাকবে, সেটাই আমি চাই। আমাদের ভলান্টিয়াররা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে, সেটারই আমি আশা পোষণ করি।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ২০১৫ সালে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠা করেছে। বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পূর্বাচলে একটি স্টেজিং এরিয়া নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে, যেন জরুরি অবস্থায় এটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোরও প্রয়োজন মিটাতে পারে। মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সিভিল মিলিটারি সমন্বয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিজিওনাল কনসালটেটিভ গ্রুপের (আরসিজি) মাধ্যমে আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছি।’ উল্লেখ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূটির বিশেষ বরাদ্দের অর্থ দিয়ে তৈরি গৃহহীন মানুষের জন্য ১১ হাজার ২৭৩টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত