মানিকগঞ্জ রেড জোন থেকে ইয়েলো জোনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামিল বিশ্বাসঃ

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে ১৯ দিন আগে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মানিকগঞ্জের সাতটি এলাকাকে ‘রেড জোন’–এর আওতায় আনা হয়েছিল। এসব এলাকা ১৯ দিন অবরুদ্ধ (লকডাউন) থাকায় সংক্রমণ কমে যায়। ফলে শনিবার (৪ জুলাই) দুপুরে রেড জোন এলাকাগুলোকে ‘ইয়েলো জোন’ ঘোষণা করেছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কমিটির সদস্যসচিব ও সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় গত ১৫ জুন রাত ৮টার পর থেকে মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা, গঙ্গাধরপট্টি ও পশ্চিম দাশড়া; সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া সদর ও ধানকোড়া ইউনিয়ন এবং সিঙ্গাইর উপজেলার সিঙ্গাইর পৌরসভা ও জয়মন্টপ ইউনিয়নকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই এসব এলাকায় লকডাউন কার্যকর করা হয়। রেড জোনভুক্ত এলাকাগুলোতে প্রথম পর্যায়ে ৮৭ জন রোগী থাকলেও পরে নতুন করে ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ১৫ জুন থেকে ৪ জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত ১৯ দিন ঘোষিত রেড জোন এলাকায় লকডাউন কার্যকর করা হয়। এ সময়কালে মোট সংক্রমিত ১২৯ জনের মধ্যে ১০১ জন সুস্থ হয়ে ওঠেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেড জোনভুক্ত ওই সাতটি এলাকাকে ইয়েলো জোন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। বর্তমানে ২৮ জন সংক্রমিত ব্যক্তি নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন।

আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দসহ কমিটির সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। রেড জোনভুক্ত এলাকাগুলোতে কোভিড সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে এলাকাগুলো ইয়েলো জোনে ঘোষণা করা হয়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা থেকে ৬ হাজার ১১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় তাঁদের মধ্যে ৬১২ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পুরুষ ৪৩৪ জন ও নারী ১৭৮ জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৮৮ জন। অবশিষ্ট ১২৪ জনের মধ্যে ২০ জন হাসপাতালে এবং ১০৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, লকডাউন সময়ের প্রথম দিকে সংক্রমণের হার কিছুটা বেশি থাকলেও পরে তা কমতে থাকে। এ ছাড়া সংক্রমিত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে ওঠেন। এ থেকে তাঁর ধারণা, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই সাতটি এলাকাকে ‘গ্রিন জোন’ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, রেড জোন ঘোষণা করায় জেলা শহরের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ ছিল। ইয়েলো জোনে উন্নীত হওয়ায় আগামীকাল রোববার থেকে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়। তবে জেলা শহরের প্রধান শহীদ রফিক সড়কে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। তবে গঙ্গাধরপট্টি ও গার্লস স্কুল সড়ক দুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত