
ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি):
মারমা ভাষায় “ক্যকপ্রাং” শব্দের অর্থ হলো পাথরের এলাকা বা পাথরের চ্যাই। রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ২ নং রাইখালী ইউনিয়নের হাফছড়ি ভিতর পাড়া ক্যকপ্রাং ঝর্না এখন পর্যটকদের আর্কষণের কেন্দ্রবিন্দু পরিণত হয়েছে। পাহাড় হতে প্রবাহিত অবিরাম ধারার পানি, ছোট বড় পাথর, গুহা, পাহাড়ের কোনায় কোনায় ঘর, পাহাড়ী মেঠো পথ, বিভিন্ন ফলের বাগান, ছোট বড় অনেকগুলো ঝর্না এই যেন প্রকৃতির অপূর্ব এক সৃষ্টি।
নারানগিরি ফেরিঘাট রাজস্হলী হেডকোয়াটার ভায়া মিতিঙ্গাছড়ি সড়ক ধরে গাড়ী করে ৪ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে হাফছড়ি বাহির পাড়া যেতে হয়, ঐখান হতে হেঁটে ২ কিমি পাহাড়ী উঁচু নিঁচু পথ ধরে ছড়ার উপর দিয়ে হেঁটে এই ঝর্নার পৌঁছানো যায়। পথে মধ্যে রাইখালী কৃষি ফার্ম, জগনাছড়ি, হাফছড়ি নিচের পাড়া পথ ধরে ঐ এলাকায় পৌঁছানো যায়। পাহাড়ের উপরে পাহাড়ী পরিবার তাদের অপূর্ব জীবনধারা, বিভিন্ন রকমের ফলের বাগান পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিবে। বিশেষ করে ছোট গুহা দিয়ে মূল ঝর্নায় যেতে আনন্দটাকে আরোও মধুময় করবে।
কথা হয় এই ঝর্না দেখতে আসা কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েত কাউছার এর সাথে, তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হবার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, এ্যাডভেঞ্জার প্রিয় পর্যটকরা এই পাথরের ঝর্না দেখে মুগ্ধ হবেন। পর্যটক বান্ধব এলাকা হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ হতে সবসময় নিরাপত্তা ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।
এই ঝর্নার সৌন্দয্য উপভোগ করতে আসা চন্দ্রঘোনা মিশন হাসপাতালের পরিচালক ডা: প্রবীর খিয়াং জানান, এতো কাছে এই রকম সুন্দর ঝর্না আছে তা আমরা কল্পনা করতে পারি না, এখানকার পরিবেশ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্হা খুব ভালো।
চন্দ্রঘোনা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, তাঁর থানা এলাকায় অবস্হিত এই ঝর্নাটি দেখার মতো, যদি সরকার মনযোগ দেয়, তাহলে এটি একটা আর্কষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করবে।
এলাকার অধিবাসী কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্হার যুগ্ম সম্পাদক থোয়াইসাপ্রু চৌধুরী রুবেল জানান, এটা অনেক পুরানো ঝর্না। প্রতিবছর এই ঝর্না দেখতে অনেক পর্যটক আসে এখানে।
হাফছড়ি ভিতর পাড়ার কার্বারি থোয়াইসুইনু মারমা, এলাকার যুবনেতা থোয়াই চিং মং মারমা জানান, এইখানে যদি একটি মাচাং ঘর বা যাত্রী ছাউনি নির্মান করলে পর্যটকদের জন্য সুবিধা হয়, এইছাড়া এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলে এইখানে আরোও পর্যটকের আগমন ঘটবে।
প্রকৃতির অপূর্ব সৃষ্টি এই ক্যকপ্রাং ঝর্না দেখতে এখন প্রতিদিন ভীড় করছে অনেক পর্যটক, এইছাড়া এই ঝর্নাকে কেন্দ্র করে যাতে এলাকার আত্মসামাজিক উন্নয়ন ঘটে এলাকাবাসীর এই প্রত্যাশা।