ইমাম হোসেন জীবন'চট্টগ্রামঃ
একই বাড়ি থেকে সপ্তাহ দুই একের মধ্যে ২০ফিট লম্বা ১বান্ডিল ৫০০কেজিও বেশি নির্মাণ রড,ষ্টীলের ঝালিবক্সের শেল্ফ,কড়াকড়ি নিরাপত্তা সত্ত্বেও অভিনব কায়দায় জানালা দিয়ে মোবাইল-টাকা চুরি সহ একাধিক অপরাধে সক্রিয় চোর চক্রের লোমহর্ষক তান্ডবে জিম্মি একাধিক ক্ষতিগ্রস্থরা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলাকাবাসি।
৭জুলাই,বুধবার,রাত ২টা.-৪৫মি.নগরীর বায়োজিদ বোস্তামি,তালতলা মসজিদ সংলগ্ন,২নং বায়োজিদ আবাসিক এলাকা,প্লট- ২৩/বি।প্রফেসর গোলাম মহিউদ্দিন বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় যে চোরেরা চুরির করার আগেই চোরচক্রের সদস্যরা মিলে মতামতের ভিত্তিতে প্ল্যান করে। কোনদিন,কখন কিভাবে,কোন সময় চুরি করবে তারা। প্ল্যান কার্যকর করার লক্ষ্যে নিরবতার জন্য ওতপেতে থাকে দীর্ঘদিন দীর্ঘসময়। এবং চোখের পলকেই ফাঁকি দিয়ে চুরির কায়দায়-কৈশল সম্পন্ন করে তাদের পরিকল্পিত উদ্দেশ্য হাসিল করে।
ঘটনাক্রমে রাত ১টা ৩০মি.ঘুমিয়ে যাওয়ার পর চোরেরা গ্লাস ভাঙা জানালার বোর্ড সরিয়ে জানালা সংলগ্ন বিছানা হতে আাইটেল মোবাইলটি প্রথমে নিয়ে নেয়।পরে সামসাং মোবাইলটি হাতের নাগালের বাইরে চার্জ অবস্থায় থাকায় চার্জার খুলে নিয়ে টান দিলেও সামসাং মোবাইলটা হাতের নাগালের মধ্যে নেওয়ার চেষ্টা করলে দস্তাদস্তিতে এক পর্যায়ে ঘুম ভেঙে যায়।
উক্ত চোরকে দেখে ফেলায় ও হাতে হাত পড়ে যাওয়ায় দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার সময় চোরের জুতা পা থেকে খুলে যাওয়ায় পায়ের জুতা ফেলে দিয়ে কোন রকম নিজেকে আড়াল করে। আরেক জন লাফিয়ে পড়ার স্পষ্ট আওয়াজ শুনি সাইটম্যান মহিউদ্দিন ও আমিও।ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাফ দিয়ে পড়ারস্থলে স্পষ্ট চিহ্ন আলামত পাওয়া যায়। লতাপাতা গাছগুলো যেখানে পড়েছে সেখানে উল্টানো এবং পলিয়ে যাওয়ার পথে একটি ইট উল্টানো লক্ষ্য করা যায়।
তৎক্ষনাৎ গেইট খুলে বের হতেই আবাসিক নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ মুন্সিকে দেখা যায়। তাকে ডাক দিয়ে চুরির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি সজাগ ও সচেতন ভাবে ডিউটি করতেছি কিন্তু আমার সামনে কাউকে আসা-যাওয়া করতে কিংবা চলাচল করতেও এই মুহূর্তে কাউকে দেখতে পাইনি। যা হয়েছে পিছনের দিকে থেকে হয়েছে।
তখন আর দেরি না করে, আমি ও আমার সাইটম্যান মহিউদ্দিন কে নিয়ে রাস্তা ঘুরে পেছনের দিগে যেতে থাকি।যাওয়ার পথে কাঁচাবাজারের প্রহরী মাসুদের কাছে চুরির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিন্ন কথা।রাস্তা ঘুরে পেছনের দিকে গেলে চোরেরা আমাদের দেখে লুকিয়ে যায়। এবং দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার পথে প্রহরী মাসুদের সাথে সাক্ষাৎ হয়ে মেইন রোডের দিগে যেতে থাকে।
পেছন থেকে ঘুরে আমরা আসতে আসতে প্রহরী মাসুদ আমাদের বলে রাশেদ,হৃদয়সহ আরেক জন এইমাত্র আপনারা যে-ই পথে এসেছেন সেই পথ দিয়ে বের হয়েছে।তৎক্ষনাৎ তাকিয়ে দেখলাম তিনজনে দ্রুতই অটো রিকশাতে উঠতে। তখন রাত ৩টার সময়ে রাস্তা জনমানবহীন নিরব ও গাড়িশূন্য স্থবব্ধ নিরবতা যেন খাঁ খাঁ করছে।
আমরা তখন রাশেদ,হৃদয়সহ সঙ্গীদের একসাথে সঙ্গবদ্ধ অবস্থানকালে রাস্তায় দেখাতে কৌশলে প্রহরীর মাধ্যমে চোর না বলা শর্তে মোবাইল না দিলেও সিম ও মেমোরি কার্ডটি যেন ফেরত দেয় সেই জন্য বিনীতভাবে অনুরোধে মাধ্যমে প্রস্তাব দিই। আমি তাদের উদ্দেশ্য আরো বলি যে,তাদের সরাসরি দিতে যদি অসুবিধে হয় তাহলে বিকল্প পন্থায় যেন ফেরত দেয়। তারা যাতে চোরের দায়ে নিজেরদের অপমান অপদস্ত হেয় প্রতিপন্ন কিংবা লজ্জিত না হয় সেইজন্য বিকল্প ভাবেও প্রস্তাব দিই বিনীত অনুরোধের প্রেক্ষিতে।
প্রয়োজনে কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে কাপড়ের থলে করে জানালা ভিতরে বা আশপাশের ফেলে দিয়ে সিম-মেমোরী ফেরত দিলে খুবই অপকৃত হব কল্পে আগ্রহ প্রকাশ করি।কারণ,উক্ত মেমোরিতে অতি জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকায় উক্ত মেমোরি কার্ড যেন,যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও ফেরত দিলে সীমাহীন উপকারসহ,অপূরণীয় ক্ষতি ও ভবিষ্যতেও নানা রকম অসুবিধে হতে রক্ষা পাব।
ঘটনার একপর্যায়ে পরে,আমার সাইটম্যান মহিউদ্দিনের পরিচিত সাদ্দামের মধ্যস্ততায় মোবাইল,সিম,ফেরত পেলেও ডিলিট করে দিয়েছে মেমোরি ও সেটের সকল মেসেজ ও নাম্বার। তখন সময়-সন্ধ্যা ৬টা বাজে।
উল্লেখ্যঃ একই বাড়ি থেকে গত ১৭জুন গেইটে ভিতর থেকে তালা থাকা সত্বেও সকাল অনুমান সময় ৯টায় লোহার ষ্টীলের জালির বক্সের শেল্ফ। ও ২জুলাই দুপুর অনুমান ২টায় ৫০০কেজিও বেশি লোহার রডের বান্ডিল চুরি হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় যে,পেছনের প্লটের অধ্যাপক ডাক্তার রবিউল হুসেন গং মালিকানাধীন নিরাপত্তা প্রহরী মোঃ মোমিনের গরু বিক্রির টাকাসহ একাধিক চুরিসহ লোমহর্ষক ঘটনার বিষয়েও জানা যায়। এবং তার-ই-সামনের বিল্ডিং বি১৯/ইউসুফ নিবাস হতে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার চুরি হয়।বিবরণে জানা যায় যে,কোঠোর নিরাপদে রাখা ড্রামের উপরের থেকে নতুন রংভর্তি ২টি পট সরিয়ে তার ভিতরে থাকা দামি মালামাল ব্যবসার জন্য রাখা ১০০পিস নতুন লুঙ্গীসহ,অন্যন্যা কাপড় নিয়ে যায়। যার বাজার মূল্য দেড়লাখ লাখ টাকারও বেশি।একই বাড়ি থেকে নতুন মটর সাইকেল,ছাদ হতে দামী ৮জোড়া নতুন কবুতর। ঘটনাক্রমে জানা যায়,মোবাইল চুরি করতে আসলে দাওয়া দেওয়ায় ও চোরের হাত ধরে ফেলায় চোরের মোবাইল ফেলে যায়,১টি ষ্টীলের দরজা,লাইট লাগালে লাইটসহ সেইট খুলে নিয়ে যায়,তার পাশে হতে ডিপকলের ফাইলিং এ বসানো পাতালের ভিতর থেকে ১২০ফিট লম্বা ডিপ কলের পাইপ তুলে কেটে টুকরো টুকরো করে নিয়ে যায় দামী পানি তোলার মোটরসহ।
তার উত্তর পাশের বিল্ডিংয়ের গাছের ফল পাঁকার আগেই দিনেরাতে চুরি করে নিয়ে যায়।পশ্চিমের বিল্ডিং প্লট-২২ থেকে ৫তলার দরজার তালা কেটে নগদ টাকাসহ মূল্যবান সবকিছু নিয়ে যায়।প্লট-২৩/এ থেকে দরজা দিয়ে ডুকে জানালার গ্রীল কেটে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পা কেটে গেলেও পালাতে সক্ষম হয়।
১নং রোড-৩/ডি, আলো হক মঞ্জিল হতে ৩মাস আগে দিনের বেলায় ২৫হাজার টাকা দামের সিঙ্গার ওয়াশিং মেশিন নীচের থেকে নিয়ে যায়।অন্যসময়ে দামী পানির মটরসহ ও একাধিক বার চুরি হয়।
কম্পেক ডেভালোপার বিল্ডিংয়ের ৫তলা হতে ডয়ারের লক ভেঙ্গে স্বর্ণ অলংকার-টাকা ও অন্যান্যা মূল্যবাকম্পেক ডেভালোপার বিল্ডিংয়ের ৫তলা হতে ডয়ারের লক ভেঙ্গে স্বর্ণ অলংকার-টাকা ও অন্যান্যা মূল্যবান সবকিছু চুরি করে নিয়ে যায়। ২৪/বি,রজনীগন্ধা, (লে.ক.সৈয়দ শামসুল ইসলাম অবঃ) বাড়ি থেকে ফ্যান ও ইলেকট্রনিকসের অন্যান্যা সামগ্রীর তালাবন্ধ গোডাউন থেকে বিশাল পরিমাণ ব্যাবসায়ীক পণ্য চুরি হয় সঙ্গবদ্ধ চক্রের হাতে।এবং ১৪,বেগম ভিলা হতে অভিনব কায়দায় স্বর্ণ-টাকা ও মূল্যবান সবকিছু নিয়ে যায়।
এলাকাবাসী আরো জানান যে,চুরি হওয়ার বিষয়টা নতুন অস্বাভাবিক কিছু নয়,এলাকায় অশুভ অশুভ ক্ষমতাধর ও চোর চক্রের কাছে আমরা অসহায় ও জিম্মি।
এলাকায় চুরির বিষয়টি এখন নিত্যদিনের ঘটনায় সাধারণে পরিণত হয়েছে।প্রায়ই সবার বাড়িতেই কোনো না কোনোভাবে নিত্যনতুন কায়দায় চুরি হচ্ছে নিয়মিতভাবে।
সঙ্গবদ্ধ চোরচক্র,কিশোরগ্যাং সহ একাধিক অন্যায় অপরাধে অভিযুক্ত প্রকাশ্যে চিহ্নিত ও ওতপেতে থাকা গোপনীয় অপরাধীরা পূর্ব পরিকল্পিত পরিকল্পনায় দীর্ঘদিনধরে চুরি করে যাচ্ছে।
নিরাপত্তাহীন এইসব এলাকা চোরের আখড়াই খ্যাত রেডজুন এলাকায় পরিনত হয়েছে।শুধু এলাকার চোর-ই- নয়,এলাকা ও এলাকার বাহিরের অপরাধীদের সঙ্গীয় সক্রিয় চক্রের মাধ্যমে এ-সব অপরাধ জনিত ঘটনা প্রবাহ বড়ছে।এসব চোরচক্রের হাত থেকে রক্ষা ও সবরকম হয়রানি ও ভোগান্তি হতে নিরাপদ নিশ্চিন্তে বসবাসের উপযোগী পরিবেশের প্রত্যাশা দাবি সচেতন এলাকাবাসির।
অপরাধীরা কারা,কোন এলাকার ভোক্তভোগীরা কমবেশি সবাই জানে। কিন্তু থানায় অভিযোগ,প্রতিবাদ করলেই অপদস্ত,হেনস্থা, হুমকি ধামকি প্রদান করে ত্রাসসৃষ্টি করে। ও আরও উল্টো পাল্টা অযাচিত অশোভন মন্তব্যে অশালীন গালিগালাজ ও মারমুখী ভঙ্গিতে যেকোন সময় যে কোনভাবেই আক্রমণের শিকারের ভয়ে ভয়ে থাকে।এছাড়াও প্রতিবাদ প্রতিকারে ইচ্ছে দাবি কোনটাই প্রতিষ্ঠিত করা যেন চরমপন্থী চোরচক্রের কাছে এলাকাবাসী অসহায়,জিম্মি ও চরম বিষাদ যন্ত্রণাময় তিক্ততার অভিজ্ঞতার অভিযোগ রয়েই গেছে দীর্ঘদিন ধরে।
এলাকাবাসীর দাবি,যথাযত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি ও আন্তরিক সদইচ্ছার জোর তদারকির দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট ও দ্রুত কার্যকরি জোর পদক্ষেপ নিয়ে অত্র এলাকায় প্রত্যেক পরিবার,সমাজ ও এলাকার নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করার জন্য সব রকমের পরিকল্পনা করা একান্ত প্রয়োজন ও জরুরী।
ন্যায়ের পক্ষে অন্যায় ও অপরাধী বিরুদ্ধে প্রতিবাদ,প্রতিরোধ আওয়াজ তুলুন। সত্য যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকাশ-প্রচারে নিজে সচেতন হোন অন্যকেও সচেতন করতে সহায়তা করুন।