
আজকের কর্ণফুলী ডেস্কঃ
”অবশেষে সব কাজ সেরে, আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে,
করে যাব আশীর্বাদ,
তারপর হব ইতিহাস ”
সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার আলোকে ও পৃথিবীর নিয়মে নতুনদের জন্যে চিরায়ত নিয়মেই পুরোনোদের চলে যেতে হয়। মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে নতুনদের বরণ করতে পুরোনোদের বিদায়ের মহাপর্ব চলছে। সদ্য বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তার শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতর ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার যে কৃতিত্ব তা আপনাদের সবার। আমি যা নই, তার চেয়ে বেশি দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কৃতিত্বের অধিকারী করেছেন। তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন বলেই আমার এই কৃতিত্ব। তবে এই কৃতিত্ব সবার। আমি আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি।’সোমবার (৭ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিদায়ী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় কর্মকর্তাদের অবদান রাখার আহ্বান জানান নাহিদ।নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছরে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা আধুনিক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি। শিক্ষা পরিবারের সবার সহযোগিতায় আমরা একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি। এটা সবার অবদান।’নাহিদ বলেন, ‘নতুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি একজন অভিজ্ঞ বিচক্ষণ মানুষ। শিক্ষা পরিবারের যে অগ্রগতি তা তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আপনারা সবাই তাকে সহযোগিতা করবেন। গত ১০ বছরের সফলতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবেন।’মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। যাতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়া সহজ হয়।’শিক্ষাক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অবদান তুলে ধরে নাহিদ বলেন, ‘শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে ছেলে ও মেয়েদের ভর্তিতে সমতা এসেছে। এটি বড় অর্জন।’শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘কেউ আবদার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাহেবের কাছে গেলে শিক্ষামন্ত্রী বলতেন, আপনারা কেউ সচিবের কাছে যাবেন না। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কখনও দ্বিমত হয়নি আমার।’শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবদান তুলে ধরে মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশ চার বিষয়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে। তার মধ্যে দুটিই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। নারীর অবস্থান ও জন্মহারে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা। এছাড়া শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের এনরোলমেন্ট ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সেরা। এর জন্য প্রাথমিক শিক্ষারও অবদান রয়েছে।এদিকে মন্ত্রণালয়ের কাজ বুঝে নিতে ৩-৪ দিন সময় চেয়েছেন নতুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি । মঙ্গলবার ( ৮ জানুয়ারি ) দুপুর পৌনে ১টার দিকে সচিবালয়ে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।এর আগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে সঙ্গে নিয়ে নিজ দফতরে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এসময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসেন তাকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে ডা. দিপু মনি বলেন, ‘গত ১০ বছর সরকার যে উন্নয়ন করেছে তা অব্যাহত থাকবে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তা ই করা হবে। এক্ষেত্রে আমার মন্ত্রণালয়ের সহকর্মী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা খুবই প্রয়োজন হবে। আজ আর বেশি কিছু বলবো না। কাজ বুঝে নিতে আমাদের ৩-৪ দিন সময় দিন।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালনে যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। সবার সহযোগিতা নিয়ে সবার সঙ্গে পরামর্শ করে এই সেক্টরের উন্নয়নে কাজ করবো। যেখানে শেখ হাসিনার মত দক্ষ, অভিজ্ঞ, সাহসী প্রধানমন্ত্রী আছেন সেখানে ভয়ের কিছু নেই।’তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন শিক্ষা মন্ত্রীর হাত ধরে শিক্ষা ক্ষেত্রকে উন্নত বিশ্বের সাথে এগিয়ে নিতে চান দায়িত্বরত সকল ব্যক্তি। জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সকল সিদ্ধান্ত ও কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার সকলের ।