এ কে জায়ীদ, বেরোবি প্রতিনিধিঃ
বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ের লক্ষ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি একদিন বৃদ্ধি করলেও বন্ধ করা হয়নি সান্ধ্যকালীন কোর্স। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত চারটি বিভাগের আওতায় সপ্তাহে দুইদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এসব সান্ধ্যকালীন কোর্সের ক্লাস। ক্লাস চলাকালীন সময়ে সেসব ক্লাসরুমে ব্যবহার করা হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র(এসি)। যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা।
জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় সাপ্তাহিক ছুটি একদিন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে সান্ধ্যকালীন কোর্সের ব্যাপারে দেয়া হয়নি কোন নির্দেশনা।
শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কোর্সের ক্লাস একদিন বন্ধ রেখে এসব সান্ধ্যকালীন কোর্সের ক্লাস নেয়া শিক্ষার্থীদের সাথে এক ধরণের প্রতারণার সামিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-০৩ এ শুক্রবার ও শনিবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এসব সান্ধ্যকালীন কোর্সের ক্লাস। কোন কোন ক্লাস রুমে ব্যবহার করা হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রও (এসি)। ক্লাসের পুরো সময়টাতে খরচ করা হচ্ছে বিদ্যুৎ।
এদিকে এসব সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের জন্য গেলো বছরের ১১ ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে দেয়া হয়েছে চিঠি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধ হলেও বেরোবিতে সেই নির্দেশনা অমান্য করেই চলছে এসব সান্ধ্যকালীন কোর্সের পাঠদান। এদিকে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য নেয়া পদক্ষেপও।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ভূগোল সমিতির সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য ক্যাম্পাসে একদিন (বৃহস্পতিবার) ক্লাস ও অফিস বন্ধ রাখা হলেও রীতিমতো চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স। তাহলে সেখানে বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে না? এটা তো বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বৈত রীতির ইঙ্গিত দিচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের জন্য মোটেও কল্যাণকর নয়। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কশন করছি বিষয়টি সুবিবেচনার জন্য।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহামুদুল হক বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ে নতুন অফিসের সময়সূচি সংক্রান্ত সরকারী সিদ্ধান্তের আগেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য শুক্রবার ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি বৃহষ্পতিবার অফলাইনে ক্লাস ও অফিস বন্ধ করেছে। তবে সান্ধ্যাকালীন এমবিএ বা মাস্টার্স প্রোগ্রামগুলো পরিচালনা করে বিভাগগুলো। বিভাগগুলোকে যদি এসব প্রোগ্রাম চালাতেই হয় তাহলে ছুটির দিনেগুলোতে দিনের বেলায় ক্লাস নিতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ খরচের বিষয়টি উল্লেখ করে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, সান্ধ্যকালীন কোর্সের যে ফি নেয়া হয় সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেয়া হয় যার তুলনায় বিদ্যুৎ খরচ নগণ্য।সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সুবিধাও নেয় না।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের নীতিমালার সাথে সান্ধ্যকালীন কোর্সের ক্লাস চালানো কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর চৌধুরী বলেন, রেগুলার কোর্সের ক্লাস কমিয়ে পাঁচ দিনের জায়গায় চারদিন করা হয়েছে এভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্সের সময়টা সংকুচিত করে একটা নীতিমালা করলে ভালো হবে যেনো সান্ধ্যকালীন কোর্সের অংশকারীরা পড়াশোনা থেকে একবারে বিচ্ছিন্ন না হয়।