রাসেল চৌধুরীঃ
আধুনা সমাজে নারী মানে মানবী, মনুষ্যা, রমণী, নন্দিনী, মাগী, আওরাত, জেনানা, অবলা, ভাবিনী, অন্তঃপুরবাসিনী এবং অপরাজিতা। একটি শব্দের চেয়ে অন্যটি আলাদা। হুমায়ুন আজাদের ‘নারী’র একটি অধ্যায়ের নাম ‘দেবী ও দানবী’। সেখানে তিনি বলছেন, নারী পুরুষের কাছে এক অনন্ত অস্বস্তির নাম। কখনো পাপীয়সী হাওয়া অথবা পবিত্র মেরীমাতা। এ মুহূর্তে বিশ্বের বেশ কিছু দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা নারী। শিক্ষা-মেধায় নারী পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে এগোচ্ছেন, কোথাও কোথাও পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছেন।নারীদের অদম্য অগ্র যাত্রার এই সময়ে সমাজের কিছু নর পিচাশের কারণে নারীরা আজ নির্যাতিতা ও যৌন লিপসার পাত্র।
এমন এক নর পিচাশের লালসার স্বীকার কুমিল্লা বুডিচং এলাকার মেয়ে ফরিদা (৩৫)।
কুমিল্লা বুডিচং এলাকার মেয়ে ফরিদা প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর ভাগ্য অন্বেষনে আসেন চট্টগ্রাম শহরে। শহরের মৌলভী পাড়াস্থ সাবেক সংসদ সদস্য ইসহাক মিয়ার ভাড়া ঘরের ১নং রুম ভাড়া নিয়ে ২ কন্যা সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছিলেন ফরিদা।
২০১৭ সালের দিকে ফরিদার উপর নজর পরে নগরীর হাজী পাড়া এলাকার গিয়াস উদ্দিনের। লোলুপু গিয়াস উদ্দিন বর্তমান স্ত্রীর কথা গোপন করে ফরিদার সাথে সর্ম্পক গড়ে তুলেন।
গিয়াসের নানা প্রলোভনে প্রভাবিত হয়ে ২০১৭ সালেই ফরিদা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন । ফরিদাও ২ কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে গিয়াসের ফাঁদে পা দিয়ে ঐ বছরে মাজারে গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়েতে ছিল না কোন কাবিন বা স্বাক্ষী।
৬ বছরের মধ্যে ফরিদা গিয়াসের কোল জুড়ে আসে এক সন্তান। বর্তমান আরো এক সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায়।
এই ৬ বছর গিয়াসের নানা অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করা ফরিদা মানিয়ে নিলেও গিয়াসের পূর্বের স্ত্রী সাথে ফরিদার দেখা হলে বাধে বিপত্তি তখনি বেরিয়ে আসে নারী লোভী পিসাচ গিয়াসের আসল চরিত্র।
এবার গিয়াস ও তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘ ৬ বছর একসাথে বসাবাস করা ফরিদা ও সন্তানকে অস্বীকার করে বসেন।
স্থানীয়দের প্রবল চাপের মূখে গিয়াস নিরুপায় হয়ে চলতি মাসের ১২ তারিখ কাজী অফিসে গিয়ে কাবিন নামা করেন। কাবিন ৫ লাখ টাকার করার কথা থাকলেও এখানেও গিয়াস চলনার আশ্রয় নেন কাজীর সাথে যোগ সাজসে ১ লাখ টাকা দেনমোহরের কথা উল্লেখ করেন। সেখানে নগদে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের কথা উল্লেখ থাকলেও ১ টাকাও পরিশোধ করেননি গিয়াস।এমনকি কাবিনের কোন কাগজও প্রদান করেননি ফরিদাকে।
কাবিন নামা কারার ঠিক পরের দিন মেয়েও রক্ষা পেলনা পিচাশ গিয়াসের হাত থেকে।
গত সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখ সকাল সাড়ে ৯ টা কি ১০ টা ঘুমন্ত ফারহানাকে একা পেয়ে নর পিচাশ বাবা গিয়াস তার বুকের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এরি সাথে নানা যৌন লিপসা পুরন করতে থাকেন।
ফারহানার ঘুম ভাঙ্গলে সে চিৎকার দেওয়ার চেষ্ঠা করে তখন গিয়াস মুখ চেপে ধরে মেয়েকে ধর্ষনের চেষ্ঠা করে এমন অভিযোগ করে ফারহানা নিজেই।
এক পর্যায়ে ফারহানার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে গিয়াস তাকে ছেড়ে দিয়ে ১০০০ টাকার নোটের বিনিময়ে মেয়েকে শান্ত করার চেষ্ঠা্ করেন।
উলে্লখ্য ইতিপূর্বে অনেকবার নাবালিকা ফারহানাকে মায়ের অনুপস্থিতে আদরের ছলে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেওয়া সহ নানা রকম যৌন হয়রানিতে লিপ্ত থাকত গিয়াস। এই ঘঠনায় ফারহানা ৩ তিন বার আত্মহত্যার করতে গেলে প্রতিবেশীরা থাকে উদ্ধার করে।
মেয়ের উপর এমন অমানবিক নির্যাতনের পর মা ফরিদা বাদী হয়ে গত মাসের ১৯ তারিখ নগরীর ডবল মুরিং থানায় গিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা করলেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তকে আসামী আটকে রেখে খবর দিলে তিনি কোন প্রকার সাহযোগীতা করেনি বলে দাবী করেন ফরিদা।
এতকিছুরপরও গিয়াস দমবার পাত্র নন, এবার তিনি কাবিনের ঠিক ৫ দিনের মাথায় চলতি মাসের ১৭ তারিখ ফরিদার গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় পাঠান তদালাকের নোটিশ। নোটিশে তার কোন সন্তান নেই বলে উল্লেখ করেন ও ফরিদার গর্ভের বর্তমান সন্তানও তার নয় বলে জানা।