চৌধুরী মুহাম্মদ রিপনঃ
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ছড়ায় পানির প্রবাহ না থাকায় চরম দুর্ভোগ পড়েছেন এলাকাবাসী দৈনন্দিন কাজের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ের অনেক মানুষকে দেখা গেছে দূরে কোথাও পানির উৎসে গিয়ে দৈনন্দিন পারিবারিক কাজ সারতে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ছড়া, ওয়াগ্গাছড়া, পাগলীপাড়া ছড়া নুনছড়িছড়া কুকিমারা পাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ায় বর্তমানে পানির প্রবাহ নেই। বর্ষার সময় যেসব ছড়া দিয়ে উপচেপড়তো পানির স্রোত, সেসব ছড়া এখন শুকিয়ে মরু হয়ে আছে।
কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গার ইউনিয়নের দুর্গম নুনছড়ি পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা ছা থোয়াই অং মারমা মংথোয়াই চিং মারমা সহ কয়েকজন বলেন, পাহাড়ে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক মানুষ এসব ছড়ার ওপর নির্ভরশীল। ছড়ার প্রবাহমান পানি থেকে গোসল, জামাকাপড় ধোয়াসহ প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন কাজ করে থাকেন বসবাসরত এলাকাবাসী। কিন্তু ছড়াগুলো এখন শুকিয়ে আছে। তাই তাদের দূর দুরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কাপ্তাইয়ের রামছড়ার বাসিন্দা সুমেল মারমা, বলেন, ছড়া শুকিয়ে যাওয়াতে পানির জন্য ভীষণ কষ্ট করতে হয়। পানির উৎসের জন্য বিভিন্ন ঝিরিতে গিয়ে মাটি গর্ত করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে খাওয়ার পানির জন্য। অপরদিকে কাপ্তাইয়ের চিৎমরম ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার বাসিন্দা মাচিংনু মারমা সহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে বিশেষ করে পাহাড়ের ওপর বসবাসকারীদের পাহাড়ি ছড়া ছাড়া আর কোন পানির উৎস নেই। নিম্ন আয়ের মানুষেরা পাহাড়ি ছড়ার ওপরই নির্ভরশীল। এ ছড়ার পানি দিয়ে যাবতীয় দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজ করতে হয়। পানি সংকট নিয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, পানি সংকট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শন করে দেখেছি সরকারি ভাবে যা বরাদ্দ পেয়েছি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ভাগ করে রিং টিউবওয়েল দেওয়া হয় তবে সংকট তুলনায় বরাদ্দ কম যার কারণে সংকট নিরসন সম্ভব হয়নি, পানি সংকট নিয়ে আমার পক্ষ হতে সব সময় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। দুর্গম এলাকার মানুষের পানির সমস্যা দূর করার পরিকল্পনা বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নিরসন করবো। পানি সংকট নিয়ে কাপ্তাইয়ের ওয়াগ্গা ইউপি চেয়ারম্যান চিরঞ্জিত তনচংগ্যা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ না থাকায় পাহাড়ি ছড়াগুলো শুকিয়ে যায়। ছড়াগুলোতে পানি প্রবাহের মূল উৎস হলো বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঝরনা ধারা। বৃষ্টি না থাকলে ঝরনা ধারায়ও পানি আসে না। শুকিয়ে যায় ছড়াগুলো। এজন্য প্রতি বছর এ সময়টাতে এখানকার সাধারণ মানুষদের পানির কষ্ট ভোগ করতে হয়। সচ্ছল ব্যক্তিরা গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির প্রয়োজন মেটাতে পারলেও সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে বৃষ্টি নামলে পানির এ কষ্ট আর থাকবে না। কাপ্তাই উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিমন চন্দ্র বর্মণ এর সাক্ষাতকার নিতে গেলে সাক্ষাতকার দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।