
রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই ৩নং চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় প্রার্থনা করতে এসে পাহাড়ি জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় পাহাড়ের সুপরিচিত ব্লগার পাইশিখই মারমা গুরুতর আহত হয়েছেন। এই হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে (৬আগষ্ট) বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন কায়েস ও সাধারণ সম্পাদক হাবীব আজম। বিবৃতিতে পিসিসিপি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার (৫আগস্ট) বিকাল ৫টায় আহত পাইশিখই মারমা (২৩) চট্টগ্রাম হতে স্ত্রীকে নিয়ে চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারে আসেন। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস সন্ত্রাসীরা পাইশিখইকে অপহরণ করে নিয়ে যেতে চায়। এসময় নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মহল দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠে। এতে তাকে অপহরণ করার চেষ্টা ব্যর্থ হলে সন্ত্রাসীরা তার মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এতে তার মাথা ফেটে প্রচুর রক্তপাত হয়। এরই মধ্যে বিজিবি ক্যাম্প থেকে সদস্যরা সেখানে পৌঁছানোর খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাকে সেখানেই ফেলে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি উদ্ধার করে প্রথমে ক্যাম্পে এবং পরে হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থবোধ করার পর পাইশিখই বাড়ি যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করলে তাকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। পাইশিখই মারমা খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্ণীছড়ি উপজেলার সাথোয়াইউ মারমার ছেলে। ফেসবুক, ইউটিউবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলো। জানা যায়, কাপ্তাই চিৎমরমে পাইপ্রু মারমা খ্যইপাইং-এর নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী পাইশিখই মারমার ওপর হামলা করে। পাইপ্রু মারমা খ্যইপাইং প্রকাশ খ্যইপাইং জেএসএস সন্তু লারমার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাপ্তাই চিৎমরম অঞ্চলের কমান্ডার। সন্ত্রাসী পাইপ্রু মারমা খ্যইপাইং রাজস্থলী উপজেলা তংবোশে পাড়ার মৃত থুইমং মারমার ছেলে। বিবৃতিতে পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানিয়ে বলা হয়, পাইশিখই মারমার উপর হামলাকারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে, পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী শান্তিকামী প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এই হামলার ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যারাই পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে সন্ত্রাসীরা টার্গেট করে যেকোনো সময় হামলা করবে। পাহাড়ের মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, মানবাধিকার নেই। পাইশিখই মারমার উপর হামলার ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন ও পাহাড়ের বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার থাকা সুশীল ব্যক্তিরা চুপ থাকায় তীব্র সমালোচনা ও ধিক্কার জানান পিসিসিপি’র নেতৃবৃন্দরা।