বিশেষ প্রতিনিধি,ঢাকা:
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলার অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গৃহীত হয়েছে। দুই মামলাতেই শেখ হাসিনা ও তার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর নাম থাকায় প্রকৃত আসামির সংখ্যা ২৮ জন। আসামিদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক ২৩ সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও রয়েছেন ৫ জন বেসামরিক নাগরিক। তারা হলেন— শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি ও র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মো. হারুন-অর-রশিদ। গত বুধবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামি সেনা কর্মকর্তারা হলেন, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল হামিদুল হক, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম (অব.), মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কে এম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মখছুরুল হক (অব.)। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, সংশোধিত আইনে অভিযুক্তরা কোনো সরকারি বা সামরিক পদে থাকতে পারবেন না। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শতাধিক ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অনেকের আজও খোঁজ মেলেনি। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর গোপন বন্দিশালা থেকে গুমের শিকার কয়েকজন ব্যক্তি মুক্তি পান। তাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাশেম ও আবদুল্লাহিল আমান আজমী উল্লেখযোগ্য।
এসব ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতেই গুমের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা দায়ের হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।