চৌধুরী মুহাম্মদ রিপনঃ
হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়ার জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব—কঠিন চীবর দান।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিনব্যাপী ব্যাঙছড়ি জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে দায়ক-দায়িকাদের উদ্যোগে দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ধর্মদেশনায় ব্যাঙছড়ি জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ. সনা মহাথেরোর সঞ্চালনায়, রাজ নিকায় মার্গে মহাসংঘনায়ক (মাংগঁই), ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাইক্য-বান্দায়া পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ক্ষেমাচারা মহাথেরো। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উদালবনিয়া পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পাইন্দাওয়াইন্সা মহাথেরো এবং বাঙ্গাল হালিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ভদন্ত উত্তরা মহাথেরো। প্রধান জ্ঞাতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মগোদা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ঞানাওয়াইন্সা মহাথেরো প্রমুখ। এ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পঞ্চশীলের মাধ্যমে মঙ্গলাচরণ শেষে ভিক্ষুসংঘকে চীবর উৎসর্গ করা হয়। জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে সমবেত প্রার্থনায় অংশ নিয়ে মারমা, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ ভিক্ষুসংঘকে চীবর দান করেন। এতে হাজারো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ অংশ নেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল—ভোরে পরিত্রাণ পাঠ, পুষ্পপূজা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, কল্পতরু দান, সংঘদান, ভিক্ষুসংঘের ধর্মদেশনা, অনুত্তর পুণ্যক্ষেত্র ভিক্ষুসংঘকে পিণ্ডদান, উদ্বোধনী সংগীত, পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের ধর্মোপদেশ এবং সন্ধ্যায় ফানুস বাতি উত্তোলন। ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মধ্য দিয়ে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জীবনে’—এমন প্রার্থনার মধ্য দিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফানুস বাতি উত্তোলন।