মোঃ নাজমুল সাঈদ সোহেল
চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় আইন শালিস কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে দিন দুপুরে ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে আতংক ছড়িয়ে জবর দখল চেষ্টা ও বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগ। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে চকরিয়া পৌর সদরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস ষ্টেশনপাড়া এলাকায়। চকরিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে,কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান সশস্ত্র দলবল নিয়ে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমার বসতভিটা জবর দখলের জন্য গেলে আবুল কাশেমের ছোটভাই আলা উদ্দিন তাদের বাঁধা দেয়। এসময় স্বস্ত্র-সন্ত্রাসীরা তাকে লোহার রড় দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় তাদের শোর চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ছাদের উপর উঠে তিনটি পানির টাংকি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার পর নীচতলায় বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে মুমুর্ষ অবস্থায় আলা উদ্দিনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
উক্ত ঘটনায় ভূক্তভোগী জমির মালিক বাদী হয়ে কাউন্সিলর মুজিবসহ ৭জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৭-৮জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে এদিন বিকালে চকরিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। ভূক্তভোগী জমির মালিক চকরিয়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাস ষ্টেশনপাড়া এলাকার নজির আহমদ এর ছেলে আবুল কাশেম থানায় দায়ের করা এজহারে দাবী করেন, চকরিয়া পৌরসভার চিরিংগা মৌজার বি এস ৭১ নম্বর খতিয়ানের ৬৪৬ খতিয়ানের অধীন পৈত্রিক ও খরিদা সত্বসহ তার সর্বমোট ১২.৬৬ শতক জমি বয়েছে। ওই জমিতে দ্বিতল বিশিষ্ট পাকাঘর নির্মান করে তিনি স্বপরিবারে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। বাদী আরও দাবী করেন, এসব জমি নামজারী জমাভাগ খতিয়ান সৃজন পূর্বক প্রতিবছর সরকারী খাজনাও পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু আসামীরা বিভিন্ন সময় দূর্লোভের বসীভূত হয়ে আমার বসতভিটা জবর দখলের চেষ্ঠা করলে আমি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কক্সবাজার এর আদালতে একটি এম আর মামলা (নং-৫৮৫/২০১৯) দায়ের করি। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালত বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) চকরিয়াকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিরোধীয় জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতের এ নির্দেশনা অমান্য করে কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান সশস্ত্র দলবল নিয়ে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমার বসতভিটা জবর দখলের জন্য গেলে আমার ছোটভাই আলা উদ্দিন তাদের বাঁধা দেয়। এসময় স্বস্ত্র-সন্ত্রাসীরা তাকে লোহার রড় দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মামলার বাদী আরও দাবী করেন, এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ছাদের উপর উঠে তিনটি পানির টাংকি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার পর নীচতলায় বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় চারলাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় তাদের শোর চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এলে সশ¯্র সন্ত্রাসীরা ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে গা ঢাকা দেয়। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়।
এ ঘটনার অভিযুক্ত চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে কয়েক দফায় চেষ্টা করে ফোন রিসিভ না করায় এ প্রতিবেদক ব্যার্থ হয়। মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস ষ্টেশনপাড়া এলাকায় জমি জবর দখল চেষ্ঠার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় জমির মালিক দাবীদার চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস ষ্টেশনপাড়া এলাকার নজির আহামদ এর ছেলে আবুল কাশেম বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।