মোঃ কামাল হোসেনঃ
সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা নিজের পরিশ্রম ও মেধাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সামাজিক জীবনে প্রতিষ্টিত হয়েছে। মানুষের সবচেয়ে বড় অর্জন ন্যায়ের সাথে থেকে খেয়ে বেঁচে থাকার অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজ এলাকার পিঁছিয়েপড়া জনগোষ্টির জন্য কল্যাণকর মহৎ কিছু করে যাওয়া। যারা সামাজিক জীবনে প্রতিষ্টিত হয়ে পরের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে পারে তারা শতাব্দীর মহাকাল পেরিয়েও বেঁচে থাকেন দেশ ও সমাজে। এরকম অনেক মানুষ সমাজে আছে যারা নিরবে নিবৃত্বে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। তেমনি এক মহানুভব প্রচার বিমুখ মানুষের কথা বলছি। নাম শিব্বির আহমদ ওসমান। লক্ষীপুর জেলার ভবানীগঞ্জের মধ্যবিত্ব এক মুসলিম পরিবারে ১৯৭৬ সালে তিনি জন্মগ্রহন করেন। তাহার পিতার নাম প্রয়াত মাওলানা কারী মুজিবুল্লাহ, মাতা মোছাম্মদ বদরের নেছা। পিতা মাওলানা কারী মুজিবুল্লাহ দেশের সুনামধন্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। তাঁহার মৃত্যুতে লক্ষীপুর সহ সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। শিব্বির আহমদ ওসমান পিতার মত যোগ্য ব্যক্তি হতে না পারলেও পিতার আদর্শ সবসময় ধারণ ও লালন করেন। তিনি ১৯৯১ সালে ১ জানুয়ারী কর্সংস্থানের জন্য চট্টগ্রাম নগরীতে আসেন এবং একটি প্রাইভেট কোম্পানির চাকরিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন স্থানে চাকরি করার পর পরিবহন সেক্টরের কাজে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি "দি এস আর ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস"এর মালিক। গত ১৬ বছর ধরে তিনি এ পেশায় আছেন। তিনি মানবাধিকার সংগঠন সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথেও সম্পৃক্ত। অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমানে তিনি পরিবহন সেক্টরের সফল একজন ব্যবসায়ী। অত্যন্ত সহজ সরল সুন্দর মনের মানুষ শিব্বির আহমদ সাংসারিক জীবনে দু সন্তানের জনক। এক ছেলে ও এক মেয়ে দুজনই অধ্যায়নরত। পরিবার নিয়ে থাকেন নগরীর ২৯ নং পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের ১ নং রোডের সুন্দর ও ছোট্ট একটি বাসায়। কদমতলীস্থ তার পরিবহন ট্রান্সপোর্টের ব্যবসায়ীক অফিসটা থাকে সব সময় লোকজনে ভরা। সাধারণত কারো মনে কষ্ট দিতে তিনি চান না। সবার সাথে মিলেমিশে থাকতে তিনি ভালবাসেন। আপাদমস্তক ভদ্রলোক শিব্বির আহমদ তার স্বল্প জীবনে অল্প আয়ে মানবতার কল্যাণে অনেক কাজ করেছেন। তিনি তার ব্যক্তিগত অথ্যায়নে অনেক গরিব মানুষকে চিকিৎসা করিয়েছেন। অনেক গরিব লোককে আর্থিক সহয়াতাও করেছেন। মানুষের কষ্ট তার সহ্য হয়না। আমি নিজে দেখেছি তার কাছে কেউ কিছু চাইলে সাথে সাথে তিনি তার সামর্থ্য অনুযায়ী দিয়ে দেন। বর্তমানে আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল না, তার পরও চেষ্টা করে ভাল কিছু করতে। তিনি এ সকল কাজ করেন নিরবে। মানবতাবাদী মানুষ শিব্বির আহমদের নিকট এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা পয়সা আজ আমার কাল আরেক জনের। তাই যতোক্ষন আল্লাহ আমার কাছে রাখছে ততোক্ষন ভাল কিছু করার চেষ্টা করি। ভাল কাজে পৃষ্টপোষকতার কারণে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সেচ্ছাসেবি সংগঠন থেকে মাদার তেরেসা সম্মাননা সহ অনেক সম্মাননা প্রাপ্ত হন। তার কাছে তার সফলতার ইতিহাস জানতে চাইলে তিনি বলেন দীর্ঘ চিন্তা চেষ্টার ফসল আমার বর্তমান অবস্থান। এই সফলতাকে আমি সফলতা মনে করিনা। কারন এখনো আমি দেখছি অনেক মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায়। এখনো অনেক মানুষ শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। আমি মনে করি মধ্যবিত্বরাই বেশি কষ্টে আছে। মধ্যবিত্ব মানুষের হাসিটা আসলে অন্তরের হাসি নয়, এটি লোক দেখানো হাসি। তাদের সেই হাসির ভিতরে অনেক দুঃখ কষ্ট বেদনা হাহাকার লুখিয়ে আছে। মান সম্মানের কারনে মধ্যবিত্বরা কাউকে বলতে পারেনা, তারা কারো কাছে চাইতেও পারেনা। না বলা কষ্ট নিয়ে তারা সমাজে বসবাস করছে। তাদের জন্য সরকার বা আমাদের কিছু করা উচিত। তিনি আরও বলেন, একজন মধ্যবিত্ব পরিবারের সন্তান হিসেবে এতটুকু আমার চাওয়া পাওয়া ছিলনা। আল্লাহ আমার সততার মুল্যায়ন করেছেন, আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। সবার দোয়া ভালবাসা নিয়ে যাহাতে পৃথিবীর এই ক্ষনিকের সময়টুকু পার করতে পারি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে তাই কামনা করছি।