এই কেমন নীরব বজ্রপাত।

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোঃ কামরুল ইসলাম।

আজ সকাল ৮ টা কি ৮.২০। প্রতিদিনের মত ভোর ৪. ৪৫-মোবাইলে সেই সতর্ক বার্তা,মধুর আওয়াজ।চোখ কসলাতে কসলাতে জানালায় তাকিয়ে দেখি চারদিকে ঘোর অন্ধকার।কিছুক্ষন পর মুয়াজ্জিনের আযান
ঔযু করে ফজরের নামাজ শেষ করে গৃহীনি ও সন্তানদের নামাজ পড়ার আহবান জানাতেই দেখি ভোরের আগমনী বার্তা আমাকে প্রতিদিনের মত মুগ্ধ
করে।এরপর আমার বড় মাকে নিয়ে প্রতিদিনের মত তার বিদ্যালয়ের উদ্দশ্যে যাত্রা।গৃহীনির আদেশ আসতে হেঁটে আসবে তাই প্রতিদিনের মত হেঁটে আসা।ডায়বেটিস-যেমন রথ দেখা,কলা বেচা এই আর কি।বাসায় এসে কিছুক্ষন বসতে না বসতে গৃহিনীর গরম,গরম চা। খেতে না খেতে বিকট শব্দ।চারদিকে হৈ,চৈ।আমার বাসা যেন কাঁপছে।আমি নিজে ভয় পেলাম।ওরা বিদ্যালয়ে,বাসায় আমি আর গৃহীনি ছাড়া কেউ নেই।পরে খবর নিয়ে জানলাম এবং সন্ধ্যেয় গৃহীনি সহ গিয়ে দেখলাম আমার বাসার পাশে চৌধুরী টাওয়ারের সেই মর্মান্তিক ঘটনা। ইতিমধ্যে ২ জনের মৃত্যু,বাকী ৩ জন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে হয়ত তারাও পরাজিত হবে।অনেকে বলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরন আমি গিয়ে দেখলাম কোন সিলিন্ডার নেই। ছবি তুলতে গিয়ে কষ্টে তাও পারলাম না।ওদের পুরো বাসা ক্ষত বিক্ষত।ঘরের দরজা বিকট শব্দের আঘাতে কয়েক টুকরা।পাশের বাসার জানালার কাঁচ ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে আছে।কেউ বলছে নীরব বজ্রপাত। ঐ সময় কোন বিজলী বা বজ্রপাতের আওয়াজ আমি শুনিনি। তবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল।কয়েক মিনিট বৃষ্টি হয়ে তাও আবার থেমে যায়।এই কেমন বজ্রপাত।আমরা জানি বাতাসের অন্ত নিহিত একটি শক্তি থাকে সেই শক্তির তারতম্যের কারণে মেঘে মেঘে ঘর্ষণ হয় ফলে মাত্রাতিরিক্ত স্হির বিদুৎ তৈরী হয় আর ঐ বিদুৎ নিকটস্হ মেঘ বা ভূমির দিকে এক সময় ছুটে আসে তখন পতিত ঐ বিদূৎকে বজ্রপাত বলে।
বজ্রপাতের তাপমাত্রা থাকে সাধারনত ৪০ হাজার ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেট।পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য বজ্রপাত প্রাকৃতিক চার্জ হিসেবে কাজ করে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।
হিমালয়ের পাদদেশ-বঙ্গোপসাগর জলবায়ু পরিবর্তনের কেন্দ্র হওয়া বাংলাদেশ বজ্রপাত প্রবণ দেশ হিসেবে চিহৃিত।বজ্রপাত এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহতের কোন উপায় নেই। রক্ষা পাওয়ার কৌশল অনেক সময় অকার্যকর বলে প্রতিয়মান হয়।
বিশেষজ্ঞ তত্ত্বমতে,বজ্রপাত কেন্দ্রস্থল দিয়ে প্রবাহিত না হয়ে ত্বক দিয়ে পরিবাহিত হয়।অনেক সময় দেয়ালের ভেতর বজ্রপাত নিরোধক ও কার্যকর হয় না।
ভবনের ভেতরে অবস্থান করলে বজ্রপাত থেকে আমরা নিরাপদে থাকব সেই ধারণা ও ঠিক নয়।আজকের এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি কি তার সাক্ষী বহন করে
না অন্য কিছু তা তদন্তে হয়ত বেরিয়ে আসবে।
বজ্রপাতে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে আশপাশের ধাতব পদার্থকে আকর্ষণ করে তাই যে কোন ধাতব পদার্থের সংস্পর্শে আমাদের মৃত্যু হতে পারে। তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে বজ্রপাতের ঝুঁকির সম্পর্ক থাকে।প্রতিদিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেলে বজ্রপাতের ঝূকি ১০ শতাংশ বেড়ে যায়।বর্তমানে জলবায়ুর পরিবর্তন পৃথিবীকে আর ও বাস অযোগ্য করে তুলবে
তাতে কোন সন্দেহ নেই।পূর্ব ষোল শহর,ওমর আলী মাতব্বর রোড়,চান্দগাঁও চৌধুরী টাওয়ারের এই মর্মান্তিক ঘটনার সুষ্ট তদন্ত হোক – নীরব বজ্রপাত
না অন্য কোন বিষয় না অপ তৎপরতা।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত