
শহিদুল ইসলাম মহেশপুরঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে ঘুগরী মাধ্যমিকের ১০ম শ্রেনীতে পড়ুয়া সাহিদা খানম (১৬) নামের এক ছাত্রী অপহরনের ২০ দিন পার হলেও আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলাতে পারেনি তাদের পরিবার। জানা গেছে উপজেলার পান্তাপাড়া ইউপির ঘুগরী গ্রামের ধান ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলামের সেজ কন্যা ঘুগরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর পড়ুয়া ছাত্রী সাহিদা খানম (১৬) উপজেলার শ্যামকুড় ইউপির শ্রীনাথপুর গ্রামে বসবাসকারী শওকত আলীর পুত্র দুই সন্তানের জনক হাসান আলী (৩০) নামের এক ক্যান্সার রোগের ভুয়া কবিরাজ) গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধায় মোটর সাইকেল যোগে বাড়ির পাশ থেকে জোর পুর্বক অপহরন করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাদেরকে খোজা খোজি করেও আজ পর্যন্ত কোথাও কোন সন্ধান মেলাতে পারেনি। এঘটনায় পিতা আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২২ সেপ্টেবর মহেশপুর থানায় একটি সাধারন ডায়রী করে। এছাড়া ২৯ সেপ্টেম্বর হাসান সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ঝিনাইদহ কোট আদালতে নারী শিশু ও আর্থিক ক্ষতি সাধনের উপর একটি নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা গেছে শ্রীনাথপুর গ্রামের শওকত আলীর পুত্র দুই সন্তানের জনক হাসান আলী (৩০) গত কয়েক বছর যাবত ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার নামে মানুষকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ৩ থেকে ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে ক্যান্সার রোগের কবিরাজি করে আসছিল। এতে কোন ব্যক্তির রোগ ভাল হয়েছে, তেমন কোন ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি। সর্ব শেষ হাসানের নিকট আত্মীয় উপজেলার পান্তাপাড়া ইউপির ঘুগরী গ্রামের আজির বক্সের ছেলে আশাদুল ইসলামের স্ত্রীকে ক্যান্সার রোগ ভালো করবে বলে দফায় দফায় বিভিন্ন কৌশলে তার নিকট থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবংচিকিৎসা চলা অবস্থায় সে মারাও যায় । স্ত্রী মারা গেলেও কবিরাজ হাসান আত্মীয় সুবাদে ঐ বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। আসাদুলের অর্থ তছরুপ এবং কবিরাজ হাসান ঐ বাড়িতে আসা যাওয়ার বিষয় নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর আশাদুল ইসলাম শ্রীনাথপুর গ্রামে উপস্থিত হয়ে ইউপি সদস্য ও মাতবরদের নিকট একটি বিচার শালিস বসায়। এতে কবিরাজ হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সন্ধায় দুটি মোটর সাইকেল যোগে ৪ যুবক মিলে তার মেয়েকে বাড়ির পাশ থেকে জোর পুর্বক অপহরন করে নিয়ে যায়।
শ্রীনাথপুর গ্রামের হারুন মেম্বর, মাতুব্বর আজিজুল হক, আবু তালেব জানান গত ৫/৬ বছর আগে হাসানের বাবা শওকত বাজারে দুধ বিক্রী করে কোন রকম সংসার চালাতো, বর্তমানে হাসান ভুয়া কবিরাজ সেজে মানুষকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে মাঠে ৫/৭ বিঘা জমি, গরুর ফার্ম, পাকা বাড়ি, দুইটি দামী মোটর সাইকেল কিনে বহাল তবিওতে জীবন যাপন করছে। এছাড়া হাসান আলীর আপন চাচা হাফিজুর রহমান জানান হাসানদের পরিবার এর আগে ভাত পাইনি। পরের ক্ষেতে কাজ ও তার বাবা দুধ বিক্রি করে কোন হালে সংসার চালাতো । হাসান ক্যান্সার রোগের কবিরাজ সেজে চুয়াডাঙ্গা হাজী কামালের নিকট ১০ লাখ, সাদ্দাম হোসেনের নিকট ৭ লাখ, মহেশপুর সাড়াতলা গ্রামের আজাদের নিকট ২ লাখ, ছামাউলের নিকট ১ লাখ, জীবননগর নারানপুর গ্রামে হাফিজুরের নিকট ৩ লাখ, জীবননগর লুৎফর রহমানের স্ত্রীর নিকট ৩০ হাজার, কোটচাঁদপুর বলা বেড়ে গ্রামে রফিকুলের আব্বার নিকট সাড়ে ৮ লাখ, রফিকুলের নিকট ৭ লাখ, রফিকুলের ভাইয়ের নিকট ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকার আদায়ের জন্য অনেকে হাসানের বিরুদ্ধে মহেশপুর থানা সহ ঝিনাইদহ / চুয়াডাঙ্গা কোট আদলতে মামলাও করেছে। যা কয়েক জনের কাছে মোবাইল মাধ্যম যোগাযোগ করলে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এবিষয়ে হাসানের ০১৭২৫-৫৪৯৭৫১ মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।