সূত্র জানায়, খুব গোপনে চলছে বিএনপি সাংগঠনিক কৌশল। গত ছয় মাসে দলের অন্তত অর্ধশত সম্ভাব্য প্রার্থী পৃথকভাবে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের ভোটের পক্ষে মাঠে থাকতে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও ভোটের পক্ষে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের দায়িত্বশীল নেতারা। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে কাজ শুরু করবে বিএনপি। পরের মাস অক্টোবর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নামবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কয়েক দফা জরিপ চালিয়ে বিএনপি এরইমধ্যে ৩০০ আসনে সহস্রাধিক প্রার্থী প্রস্তুত করে রেখেছে। এর মধ্যে প্রায় দেড়‘শ সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও তরুণ নেতা-নেত্রী সবুজ সংকেত পেয়ে গোপনে মাঠে কাজও শুরু করেছেন।
তবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার দাবিসহ দলের চেয়ারপারসনের কারামুক্তি ছাড়াও সংসদ ভেঙে দেওয়া, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় নির্বাচনের দাবিতেও মাঠে সরব থাকতে চায় বিএনপি।
সর্বশেষ ৭ আগস্ট ১৪টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও বিএনপিকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ওই বৈঠকে বিএনপিও ছিল অনেকটাই নমনীয়। তারা কূটনীতিকদের জানিয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বড় অংশই এখন মনে করছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ছিল মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। বিএনপি বর্তমান পরিস্থিতির মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কখনই পড়েনি। এ অবস্থা চলতে থাকলে বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। এ কারণে যত প্রতিকূল পরিবেশই থাকুক না কেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নিতে হবে। নইলে দলের অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়বে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পালাবদল হয়। আমার জানা মতে, তারাও নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচন বর্জন কোনো সমাধান নয়। তাই যত প্রতিকূল পরিবেশই থাকুক না কেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে— এটাই আমি মনে করি।’