কাপ্তাই এর কেআরসি স্কুলের এমপিও না হওয়ায় হতাশ শিক্ষক শিক্ষার্থী: পাঠদানে বিরত থাকার ঘোষণা।

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝুলন দত্ত,কাপ্তাইঃ

সারা দেশের ন্যায় তিন পার্বত্য জেলায় এই বছর সবচেয়ে বেশি স্কুল-মাদ্রাসা এমপিও হওয়ার পরও দীর্ঘ ৩৫ বছরেও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের শিল্প এলাকা হিসাবে খ্যাত চন্দ্রঘোনা কে.আর.সি উচ্চ বিদ্যালয় এমপিও তালিকা দেখে বাদ পড়ায় হতাশ এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এমপিও তালিকায় অন্তর্ভূক্তির সমস্ত যোগ্যতা থাকলেও ৩৫’বছরে পুরানো ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির ভাগ্যে এমপিও না জুটায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে এখানকার শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য জেএসসির নির্বাচনী পরিক্ষা সহ বিদ্যালয়ের পাঠদান স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়কে এমপিও ভুক্ত না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে মুঠো ফোনে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া মো. রফিকুল আলম। শবিবার সকালে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে এমন আন্দোলনের ডাক দিয়ে লিখিত অবহিত করেছেন শিক্ষকরা। কাপ্তাইয়ের কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রফিকুল আলম বলেন, ২০০২ সালে কেপিএমের লোকসানের মুখে পে-অফ হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। তারপর থেকেই অজ্ঞতা ও মুর্খতার হাত থেকে সমাজকে রক্ষার চেষ্টায় এই বিদ্যালয়েই আড়াই-দেড় হাজার টাকা বেতনে জীবনযোদ্ধে সংগ্রাম করে চলছি। গত ২০০৯ সালেও এই বিদ্যালয়কে প্রশাসনিক-রাজনৈতিক সহ সর্বমহলের কর্তৃক এমপিও ভুক্তির চূড়ান্ত আশা দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত হয়নি কিছুই। আগামী ২৮ ও ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জেএসসি পরিক্ষার্থীদের ২টি নিবার্চনী পরিক্ষা ও শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বিরত থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়টিকে এমপিও ভুক্তি করা না পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানিয়ে শিক্ষকরা বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আমরা আর পারাছিনা। উল্লেখ্য, এই বছর কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১’শত জন ছাত্র-ছাত্রী জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরিক্ষায় অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৫’শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করছে।
কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারমান মো. মফিজুল হক বলেন, দীর্ঘ তেরটি বছর এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছে। ওনারা যেই উদাহরণ দেখিয়েছে তা এই পাহাড়ি অঞ্চলে অনন্য হয়ে থাকবে। কিন্তু সবারই তো ধৈর্য শক্তি আছে। আর কত-বছরই বা এভাবে চলা যায়? শিক্ষকদের পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন প্রসঙ্গে তিনি এই প্রতিনিধিকে তিনি দুঃখ করে বলেন, বিদ্যালয়ের ৫’শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেলো। এদিকে শিক্ষকদের এই আন্দোলনের ডাককে যৌক্তিক মনে করে চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার ইসলাম চৌধুরী বেবি বলেন, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ দীর্ঘদিন যে বিনা-বেতনে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন তার জন্য তাদের প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা। এই বিদ্যালয়ের প্রতি মাননীয় এমপি দীপংকর তালুকদারের যথেষ্ঠ আন্তরিকতা রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করেছি বিদ্যালয়টিকে এমপিও ভুক্ত করতে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবো।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত