
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সকাল থেকেই প্রচন্ড ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশা, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। ৩০ বছর পর প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার তাড়া সবার মধ্যে। পুনর্মিলনী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ার কথা ছিল প্রিয় প্রাঙ্গণ হালিশহর বেগমজান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সবুজ চত্ত্বরে। শঙ্কার সব মেঘ সরিয়ে ঘন কুয়াশার মধ্যেই ১০ জানুয়ারী সব বন্ধু এক হয়েছিলাম প্রিয় ক্যাম্পাসে। উপলক্ষ, হালিশহর বেগম জান বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি ব্যাচ’৮৯ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দুইদিন ব্যাপী পুনর্মিলন অনুষ্ঠান। কাজটা সহজ ছিল না। সাত মাস আগে যা ছিল কয়েকজন বন্ধুর স্বপ্ন, সেটাই সত্যি করতে পেরেছিলাম সবাই। অস্থায়ী অফিস দরবার হলসহ বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে বসে দফায় দফায় মতবিনিময় ও সাধারণ আলোচনা সভা করি। অবশেষে নিবন্ধিত শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্য’রাসহ মিলিত হই স্কুল প্রাঙ্গণে। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব আবদুল মাবুদ সওদাগরের কবরে জিয়ারত ও পুষ্প শ্রদ্ধাঞ্জলীর মাধ্যমে শুর“ হয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহিদ হোসেন ও ‘বন্ধন’ এসএসসি ব্যাচ’৮৯ প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের আহবায়ক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম কর্তৃক জাতীয় ও বন্ধনের পতাকা উত্তোলন, শান্তির প্রতীক ‘পায়রা’ ও রঙ-বেরংগের বেলুন উড়িয়ে ২দিনব্যাপি ‘২য় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ২০২০ এর শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর শুর“ হয় আনন্দ র্যালী ‘এসো মিলি প্রাণের উচ্ছ্বাসে’। আনন্দ র্যালীর উদ্দেশ্যে বানানো কমলা রঙের গেঞ্জি ও নীল রঙের টুপি পড়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাদের সন্তানরা র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। র্যালী শেষে নাস্তা, আড্ডা, গুল্পগুজব, প্রাক্তনীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ মাঝে মধ্যে চলতে থাকে ফটোসেশন ও সেলফি। দুপুরে বিদ্যালয়ের পাশে স্মৃতি বিজড়িত মসজিদে জুমার নামাজ আদায়, একত্রে বসে দুপুরের খাওয়া ও পারস্পরিক কুশল বিনিময়ে পুরোটা দিন চলে যায়। এরপর চলতে থাকে ২য়দিনের প্রস্তুতি। সকাল থেকেই কেউ ব্যক্তিগত গাড়ীতে আবার কেউ কেউ ভাড়া করা নির্ধারিত বাসে করে ২য় দিনের অনুষ্ঠানমালার জন্য নির্ধারিত ভেন্যু: চট্টগ্রামের অভিজাত ক্লাব চট্টগ্রাম বোটক্লাবের উদ্দেশ্যে যাত্রা। প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সকাল ১০ টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন। চলতে থাকে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সকল সদস্যের জন্য বিভিন্ন ইভেন্টে নির্ধারিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ফটোসেশন ও সেলফি, সকালের নাস্তা, চা, কফি, আড্ডা, কুশলাদি বিনিময় ইত্যাদি আমন্ত্রিত অতিথিসহ সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থী, স্কুলে কর্মরত শিক্ষকমন্ডলী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিবারের সকল সদস্যরা দুপুরের খাবারে অংশগ্রহণ করেন। বিকাল সাড়ে ৩ টায় শুর“ হয় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের সম্মানে সম্বর্ধনা, আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের আহবায়ক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব মোহাম্মদ এমরান ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহেদা আকতার (লিপি)’র যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্কুল পরিচলানা পর্ষদের সভাপতি জাহিদ হোসেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নাসিম উদ্দিন, নুর“ল আলম, ডা. জাকির“ল ইসলাম। প্রাক্তন শিক্ষকদের মধ্যে যথাক্রমে মো. নুর“ল কবীর, হুমায়ুন কবীর ও রেজাউল করিম। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিষদের যুগ্ম আহবায়কদ্বয় যথাক্রমে মো. সাবেত চৌধুরী ও সাদাত হোসেন চৌধুরী সাজ্জাদ, শেখ আলাউদ্দিন মো. ফার“ক, ইকবাল চৌধুরী, মুজিবুর রহমান মজুমদার, উম্মে কুলসুম নাজমা, আনিসুর রহমান হাসেম, ফল্গুনী দত্ত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এসএসসি ব্যাচ’৮৯ প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাজী নুর“ল ইসলামের পরিবারকে অনুদানের ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
সর্বশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ডলি শায়ন্তনী সংগীত পরিবেশন এবং জি-বাংলা মিরাক্কেলখ্যাত কৌতুক শিল্পী আরমান কৌতুক পরিবেশন করেন।
বার্তাপ্রেরক
মো. এমরান
সদস্য সচিব