দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে থেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলো শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

মোঃ সুজন ইসলাম নীলফামারী প্রতিনিধিঃ

ছিলো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছিলো দীর্ঘ লাইন। শিক্ষার্থীরাই ছিলেন প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বে। ছিলো তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনও। তবে এতসব নির্বাচনী ব্যবস্থায় ছিলো না বাহিরের কোন লোকজন। সব দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীরাই নিজেরাই। এচিত্র দেখা গেছে নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়নের পলাশবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সারাদেশে স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের অংশ হিসেবে এই বিদ্যালয়েও ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় শনিবার। বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৯টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় এখানে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউবা লাঠি হাতে নিরাপত্তার দায়িত্বে, কেউ বা প্রিজাইডিং আবার কেউ পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউবা ব্যালট পেপার হাতে নিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দেখা গেছে।
প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব হিসেবে পালন করা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী গৌড়ি রায় বলেন, সপ্তম শ্রেণীর নেতা নির্বাচন করা হয় আমার কক্ষে। এই শ্রেণীতে ৫৯জন ভোটার রয়েছে। আমরা তিন জন দায়িত্ব পালন করছি ভোটগ্রহণে। অত্যন্ত চমৎকার পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয় যথাসময়ে। পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বর্ষা আকতার জানান, এবার নিয়ে দু’বার এই দায়িত্ব পালন করছি। শিক্ষার্থী অবস্থায় গুরুত্বপুর্ণ এ দায়িত্ব পালনে নিজেকে আরো দায়িত্বশীল হতে শিখছি। নিশ্চয় এর অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারবো। ভোট দেওয়া ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী পুর্ণিমা জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমি ভোট দিয়েছিলাম। অনেক ভালো লেগেছিলো। পছন্দ করতে শিখছি। ভালো প্রার্থী নির্বাচন করার ব্যাপারে সচেতন হচ্ছি এখন থেকে। ভোট চলাকালে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন নিবার্চন কমিশনের প্রধান সোহানা আখতার এবং অপর দুই সদস্য রোখসানা আখতার ও শারমিন আখতার। এছাড়া সার্বিক পর্যবেক্ষণ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম রায় বাদল।
বিদ্যালয় সুত্র জানায়, ৫ম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৫জন আটজনকে নির্বাচিত করা হয় স্টুডেন্টস কেবিনেটের জন্য। তারা পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও এবং শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, পানি সম্পদ, বৃক্ষ রোপন ও বাগান তৈরি, দিবস ও অনুষ্ঠান উদযাপন এবং অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবে। এই বিদ্যালয়ে নির্বাচিতরা হলেন জয়শ্রী রায়, পিংকি সরকার, দেবী শর্মা, রাজিয়া সুলতানা, আখিঁ আখতার, রতনা দাশ, স্বপ্না দাশ ও বৃষ্টি রায়।
পলাশবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, নির্বাচনে ১৪জন অংশগ্রহণ করে। অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে শান্তিুপুর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, এনিয়ে পাঁচবার স্টুডেন্টস কেবিনেটের ভোট হলো এখানে। শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি বোধ তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে তারা নিজেদেরকে তৈরি করে নিতে পারবে। জেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে একযোগে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানে উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে ১০৫টি দাখিল মাদরাসা এবং ২০০টি উচ্চ বিদ্যালয় ছিলো।
তিনি জানান, শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা এবং গণতান্ত্রিক মুল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শিখন কার্যক্রমে শিক্ষক মন্ডলীকে সহযোগীতা করা, ছাত্র ভর্তি ও ঝড়ে পড়া রোধে ভুমিকা রাখতে পারবে।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত