জেসমিন আক্তার :
নিহত রোকসানার পরিবারের অভিযোগ থেকে জানাযায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আওতাধীন ধলপুর এলাকায় ৬০/১০ সি, র পঞ্চম তলার ভাড়াটিয়া নুর উদ্দিনের স্ত্রী রোকসানা সহ পরিবারের অন্যান্য দের নিয়ে বসবাস করে আসছিল। পাষন্ড স্বামী নুর উদ্দিন প্রায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রোকসানার উপর মানুষিক নির্যাতন চালায়।
অবশেষে বলীর পাঠা হলেন সুখের স্বপ্ন নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে বন্ধন ছিন্ন করে আসা রোকসানা আক্তার (৩২)। ২০১১-সালে সরকারি কুমুদিনী কলেজ টাঙ্গাইল হতে স্নাতক সম্মান ও ২০১২ সালে সরকারি শাদত কলেজ টাঙ্গাইল হতে প্রথম বিভাগে মাস্টার্স পাশ করেন এবং স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিধ ক্রিয়া নৈপুণ্যতায় বিশেষ সুনামের অধিকারী ছিলেন।
একটি এনজিও সংস্থায় চাকরি করতেন রোকসানা একই সংস্থায় চাকুরী করেতেন তার স্বামী নুর উদ্দিনও ।
একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার ফলে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । কিছু দিন যেতেই রোকসানা তার পরিবারকে না জানিয়ে গত ০ ৯ই জানুয়ারী২০২০ ইং তারিখ ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক তাদের বিবাহ করে দাম্পত্য জীবনের যাত্রা শুরু করে। মোঃ নুর উদ্দিন (৩২) পিতা- মৃত আব্দুল মুন্নাফ, মাতা- মনজুরা বেগম, সাং- বেতাগী, থানা- রাঙ্গুনিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমানে সাং- ৬০/১০ সি, ধলপুর, থানা- যাত্রাবাড়ীতে। কিছু দিন যেতে না যেতেই রোকসানা তার পরিবারকে বিবাহের বিষয়টি জানান। পরিবারের লোকজন সংসারের ছোট মেয়ের সুখের কথা ভেবে রোখসানার স্বামী নূরউদ্দিনকে ঘরোয়া পরিবেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে বরণ করে নেয়।
তার পরপরই স্বামী লম্পট নুর উদ্দিন নিজ দায়িত্বে নিয়ে যায় তাদের বাসায়। রোখসানার ভাই মাজহারুল এ প্রতিবেদককে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান তাদের আদরের ছোট বোন রোকসানার বিবাহের পর হতেই নুর উদ্দিন ও তার বোন মুন্নি বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন মামা বাচ্চু নানা অজুহাতে যৌতুকের টাকার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন প্রায়।
বিষয়টি জানতে পেরে ছোট বোন যাতে সুখ শান্তিতে থাকতে পারে সে জন্যে বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ আছে ভেবে তারা এই পরিবারের ভাই-বোন ও নিকটাত্মীয়দের সহযোগিতায় গত ৭ই ফ্রেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ শুক্রবার বোনের শ্বশুরবাড়ি লোকজনের হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা ঢাকা ধনপুরের বর্তমান ঠিকানায় তাদেরকে বুঝিয়ে দিয়ে দেয়।
কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর রোখসানার স্বামী নুরুদ্দিন মার্চ মাসের শেষের দিকে নতুন করে ব্যবসার অজুহাত দেখিয়ে আবারো ৫ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য পূর্বের কায়দায় রোখসানার উপর পৈশাচিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় বলে রোখসানার পরিবার জানিয়েছে ।
বিষয়টি জানার পর বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের কথা জানিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার জন্য নুরুদ্দিনের পরিবারের কাছে অনুরোধ জানান রোকসানার পরিবার থেকে ।
এ দিকে (গত ৩রা) জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিহত রোকসানার স্বামী নুর উদ্দিন মোবাইল ফোন থেকে নিহত রোকসানার পরিবার কে জানান, বাসার বেড রুমের ভীতরে বাথরুমে শাওয়ারের সাথে নিজের ব্যবহৃত ওড়না গলায় বেঁধে আত্মহত্যা করেছে ।এই সংবাদ জানার সাথে সাথে নিহত রোকসানার পরিবারের লোকজন ছুটে আসে যাত্রাবাড়ী নিহত বোনের বাসায়। সেখানে এসে দেখতে পায় চেইন আটকানো একটি সাদা ব্যাগের মধ্যে বোনের মৃতদেহ
বাসার খাবার টেবিলের পাশে মেজের উপর পড়ে আছে তাদের বোন ।
এমন অবস্থায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সাব ইন্সপেক্টর নিরস্ত্র নির্মল কুমার দাস বিপি ৯৭৪৯৪০২৯৫০৪ লিখিত দিয়ে রোকসানার পরিবার কে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে বলে রোকসানার পরিবারের অভিযোগ থেকে জানা যায়।
এদিকে নির্মল কুমার দাস অতি ব্যস্ততার সাথে রোকসানার পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনাস্থল তাদের ভাষ্যমতে বাথ রুমেরর শাওয়ারের একটি পাইপ দেখিয়ে তাদের বোনের মৃত্যুর কাহিনী বিস্তারিত বর্ণনা করতে থাকেন। সবকিছু দেখা ও শোনার পর তাদের সন্দেহ হয় কিভাবে বাথরুমের শাওয়ারের সাথে ঝুলে মৃত্যুবরণ করেছে রোকসানা । বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত হলে হত্যা না আত্মহত্যা তা বের হয়ে আসবে বলে রোকসানার পরিবারের দাবী ।
অপরদিকে বোনের মৃত্যু দেহ যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে আসলে সেখানে নুর উদ্দিন ও তার বোন মুন্নি বড় ভাই গিয়াসউদ্দিন ও মামা বাচ্চু থানায় এসআই নির্মল কুমার দাসের সাথে পরামর্শ করে তাদের নিজের মতো করে মামলার এজাহার লিখেন এবং ব্যস্ততা দেখিয়ে এক প্রকার জোর করে নিহত রোকসানার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে জোড় করে স্বাক্ষর নেয় ঐ পুলিশ কর্মকর্তা দাবি রোকসানার পরিবারের।
একদিকে এই ঘটনার পর ৪/৭/২০২০ তারিখে লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিহত রোকসানার বাবার গ্রামের বাড়িতে দাফনের কাজ শেষ করা হয়।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করে নিহত রোকসানার পরিবার থেকে একটি লিখিত অভিযোগ প্রেরন করেছেন বিভিন্ন দপ্তরে।
এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।#