ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) :
কাপ্তাই শিল্প এলাকা ও সুইডিশ মার্কেটে বন্যহাতির তান্ডবে ২টি দোকান ও ৬টি বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যহাতির তান্ডবে প্রতিনিয়ত এলাকার লোকজনের মধ্যে ভয়ংকর আতংক বিরাজ করছে। অনেক পরিবারের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও গভীর রাতে বন্য হাতির ভয়ংকর আতংকে জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেলছেন। শিল্প এলাকার বসবাসরত লোকজন অভিযোগ করেন, দীর্ঘ একমাস যাবৎ একটি বন্য হাতি পার্শ্ববর্তী বন হতে শিল্পএলাকা, সুইডিশ মার্কেট, কেপিএম চিপার হাউজসহ বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত হাতিটি লোকালয়ে এসে লোকজনের বসতভিটার কলাগাছ, নারিকেলগাছ ধ্বংস করে বসতভিটা এবং সুইডিশ মার্কেটের জাকির হোসন ও জয়নালের দোকান ভেঙ্গে পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
মসজিদের ইমাম আনোয়ার হোসেন ও মুয়াজ্জিন ইসমাইল, ফজরের নামাজ পড়তে এসে হাতির আক্রমনে আহত হয়েছে এবং অনেকসময় হাতির আক্রমনে খুব বিপদজনক সমস্যার ও সম্মুখীন হয়েছেন।
উক্ত এলাকার হাতির আক্রমণে ভুক্তভোগী আবু ইউসুফ, মিন্টু মিয়া, ফারুক, হালিম, আব্দুল মালেক, ইকবাল ও কবির আহমদ জানান, দীর্ঘ একমাস যাবৎ এ হাতিটি রাতে কিংবা ভোররাতে এসে তাঁদের বসতভিটার গাছপালা ভেঙ্গে সাবার করে দিচ্ছে। এবং সর্বশেষ বাসাবাড়িতে এসে হামলা করছে। তারা আরো বলেন, এখন নিজেদের ঘরে থাকাটাও বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এইদিকে মঙ্গলবার(২৫ আগস্ট) শিল্প এলাকার বাসিন্দা ফারুক জানান, ভোর ৩টায় হাতিটি তাঁর বাসায় হামলা করে নারিকেল গাছ চালের ওপর ফেলে দেয় এবং বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রাতে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা বৃষ্টি হাতির আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, ভয়ঙ্কর হাতির তাণ্ডবে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
উক্ত এলাকার সচেতন নাগরিক আকতার আলম, আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতিনিয়ত তারা বিভিন্ন প্রকার,বাঁশি বাজিয়ে, আগুন জালিয়ে হাতি তারানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। উক্ত হাতিটি যে কোন সময় বড়ধরনের একটি ঘটনা ঘটনার পূর্বে প্রশাসন তথা বনবিভাগ এর একটি ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এইদিকে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকালে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান বন্যহাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে তিনি জানান, বন্যহাতির তান্ডবরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এবং সেই সাথে পরবর্তীতে বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ব্যাক্তিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
এই বিষয়ে কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব উল আলম বলেন, বনের মধ্যে খাবার না থাকার কারনে হাতিরা লোকালয়ে এসে তান্ডব করছে। কাপ্তাই বনবিভাগ প্রশাসনিক ভাবে এদের একটা ব্যবস্থা নিবে বলে তিনি জানান।
এইসময় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহাবুব উল আলম, সিএমসি সভাপতি কাজী মাকসুদুর রহমান বাবুল, বিএফআইডিসির মাঠ পরিদর্শক আমান উল্ললা, ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার,আব্দুল আহাদ সেলিমসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।