কাপ্তাই থানা ওসি নাসির উদ্দীন এবং উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা লিমনের একটি মানবিক সফল অভিযান: একজন মেয়ের আত্মহননের পথ থেকে বাঁচানোর গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি):

ইয়াসমিন(ছদ্মনাম) বয়স ২২ বছর, কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ি এলাকার বাসিন্দা। অপরদিকে মো: সোহাগ(ছদ্মনাম) বয়স ২৮ বছর, কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা। কয়েকবছর আগে পারিবারিক অমতে পরস্পরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন তারা। তাদের ৬ মাসের একটা বাচ্চাও রয়েছে। কিন্ত কথায় আছে, ভালোবেসে যারা সুখ পেতে চাই, তারা ভূল করে। তাইতো শশুড় বাড়ীতে ইয়াসমিন এর সুখ যেন অধরা হয়ে রইল। বনিবনা হচ্ছে না তার জামাই এর পরিবারের কারো সাথে। ঝগড়া যেন নিত্য সঙ্গী তাদের, তাই ফিরে আসলো ইয়াসমিন বড়ইছড়ি তার বাবার বাড়ীতে। কিন্ত এখানেও তার সুখ পাখি ধরা দিচ্ছে না, যেহেতু পরিবারের অমতে বিয়ে তাই বাবার বাড়ীর লোকজনের সাথে এই বিষয় নিয়ে মতবিরোধ হচ্ছিল, তারা চাচ্ছিল সে যেন শশুড় বাড়ীতে গিয়ে সংসার করে। কিন্ত ইয়াসমিন আলাদা বাসা নিয়ে স্বামীর সাথে ঘর করতে চাই। কিন্ত তার স্বামী সোহাগের সেই আর্থিক ক্ষমতাও নেই।
সব কিছু মিলে মানসিক অবসাদে ভূগছিলো ইয়াসমিন। তাই জীবনের মায়াকে ত্যাগ করে চলে যেতে চাইলো সে না ফেরার দেশে।
গত বুধবার(২৬ আগস্ট) রাত ১০ টায় একসাথে খেয়ে ফেললো ২৬ টি প্রেসারের ঔষুধ। ইতিমধ্যে মেয়েটা মেসেন্জারে তার এক বান্ধবীকে চ্যাটে জানালো সেই পৃথীবিতে থাকতে চায় না, আবার ঐ বান্ধবী বিষয়টি কাপ্তাই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এ আর লিমনকে অবহিত করলে তিনি রাত ১০. ৩০ মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল এ ছুটে যান। এর আর লিমন বিষয়টি উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই খোকনকে জানালেও তিনিও মেয়েটার বাড়ীতে যান। মেয়েটার কথাবার্তা সন্দেহ হলে এ আর লিমন কাপ্তাই থানার ওসি নাসির উদ্দীনকে অবহিত করেন। কাপ্তাই থানার ওসি
থানার এস আই শফিকুল ইসলাম এবং এস আই সৈয়দ মনিরুজ্জামান মনিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাবার নির্দেশ দেন, । প্রথমে মেয়েটাকে নিয়ে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করলেও স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা মেয়েটাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল এ নেবার পরামর্শ দেন। কিন্ত এরই মধ্যে ওসি নাসির উদ্দীন রাত ১২ টায় চন্দ্রঘোনা হাসপাতাল এর ডাক্তার বিলিয়ামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মেয়েটাকে দ্রুত হাসপাতাল এ নেবার পরামর্শ দেন। এই মধ্য রাতে ওসি নিজ উদ্যোগে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে মেয়েটাকে চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল এ নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে মধ্য রাতে হাসপাতাল এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা: বিলিয়াম এ সাংমা অপারেশন থিয়েটারে এসে মেয়েটার পেট হতে দ্রুত ঔষধ ওয়াশ করে বের করে নিয়ে এসে মৃত্যু পথ যাত্রী একজন মেয়েকে বাচান। কাপ্তাই থানা এবং ডাক্তারের দক্ষতায় ও রাত জাগা প্রচেষ্টায় নির্ঘাত আত্বহত্যার থেকে বেচে গেল একটি প্রাণ।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত