
আজকের কর্ণফুলী ডেস্কঃ
একজন বুলিসমৃদ্ধ লোকের কীর্তিকলাপ বর্ণনা করবো আজ। তার আগে চলুন জাতীয় পত্রিকার কিছু শিরোণামে চোখ ফেরানো যাক।
* অসমাপ্ত দুবলাকুড়ি সেতু: কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এবার ১৮ লাখ টাকা জরিমানা। (প্রথম আলো, ২৪ জুলাই, ২০০৪)
* কাদের সিদ্দিকীর সেতু কেলেংকারী: সোয়া কোটি টাকা জরিমানা। নেত্রকোনা ও জামালপুরের দুই সেতুর কার্যাদেশ বাতিল। (প্রথম আলো, ১৯ জুলাই, ২০০৪)
* চার বছর ধরে ঝুলছে টঙ্গী তৃতীয় সেতুর কাজ: কাজ পেয়েছে কাদের সিদ্দিকীর সোনার বাংলা (প্রথম আলো, ২৬ অক্টোবর,২০০৮)
* টাঙ্গাইল অচল করে রেখেছেন কাদের সিদ্দিকী। ( ২৫ অক্টোবর, ২০০৮)
* সময় বাড়িয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর বাণিজ্য। ( ২৫ অক্টোবর, ২০০৮)
এ তো গেল বেশ কয়েকবছর আগে উক্ত ব্যক্তির দুর্নীতি ও অপকর্মের চিত্র। এটুকু পড়েই পাঠক নিশ্চয়ই অনুধাবণ করতে পারছেন যে গুণধর কাদের সিদ্দিকীর কথা বলা হচ্ছে।
আর্থিক দুর্নীতির খবরের শিরোণাম হয়ে তিনি আমাদের প্রায়ই জানান দেন যে তিনি আছেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, টাঙ্গাইলে সেতু, সড়ক ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণের মতো নয়টি জরুরি উন্নয়ন কাজ বছরের পর বছর ফেলে রেখেছে সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা লিমিটেড। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কাদের সিদ্দিকী। কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়ের পর ক্ষেত্রবিশেষে এক থেকে ১১ বছর পার হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনো অনুরোধ বা চাপ তিনি বিবেচনায় নেননি। কিন্তু সাড়ে ২৩ কোটি টাকার এসব উন্নয়নকাজ আংশিকভাবে সম্পন্ন করে তিনি প্রায় ১৩ কোটি টাকা বিল তুলে নিয়েছেন।
এতোক্ষণ তো গেল তার অতীত অপকর্মের কথা। সময়ের পরিক্রমায় নিত্যনতুন অপকর্ম ও জালিয়াতিতে হাত পাকিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে তার কপালে জুটেছে ঋণখেলাপির খেতাব। টাঙ্গাইল- ৪ আসনের উপনির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আব্দুল কাদের সিদ্দিকীকে ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেউ এরকম খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা হারান। ফলে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না কাদের সিদ্দিকী। তার জন্য হতাশার এই খবর একইসাথে তার জন্য নতুন ‘২ নম্বরি ব্যবসার’ দ্বারও খুলে দিয়েছে।
কাদের সিদ্দিকীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তিনি এ আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রদানে একরকম নিলামের ডাক দিয়েছেন, যা এখন টাঙ্গাইলের ওপেন সিক্রেট। এজন্য দামও হাঁকিয়েছেন চড়া। জানা যায়, মনোনয়ন প্রদানে ৫০ লাখ টাকা চেয়েছেন তিনি। প্রার্থী হিসেবেও তার প্রথম পছন্দ জামায়াত ঘরানার কেউ। তবে এখন পর্যন্ত এই মনোনয়ন ক্রয়ে কেউ আগ্রহ প্রকাশ করেনি বলে জানা গেছে। (অদ্বিতীয় বাংলা হতে )