আজ থেকে বৌদ্ধদের তিনমাস উপবাস অধিস্থান আরম্ভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশু তনচংগ্যা,
কাপ্তাই, চন্দ্রঘোনা,রাজস্থলী হতে।

শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা, দিনটি বৌদ্ধদের অন্যতম পুণ্যতিথি। এ পূর্ণিমা তিথিতে রাজকুমার সিদ্ধার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ, গৃহত্যাগ, সারানাথের ঋষি পতন মৃগদাবে পঞ্চবর্গীয় ভিক্ষুদের কাছে ভগবান বুদ্ধের ধর্মচক্র প্রবর্তনসূত্র দেশনা হয়েছিল। একই তিথিতে শ্রাবস্তীর গণ্ডম্ব বৃক্ষমূলে প্রতিহার্য ঋষি প্রদর্শন, মাতৃদেবীকে ধর্মদেশনার জন্য তুষিতস্বর্গে গমন এবং ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস আরম্ভও হয়।
এ পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিহারে (প্যাগোডা) গিয়ে বুদ্ধকে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শীলে অধিষ্ঠিত হন। আজ থেকে তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস পালনের মাধ্যমে প্রত্যেক বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা শীলে অধিষ্ঠিত হয়ে একই বিহারে অবস্থান করবেন। বর্ষাবাস শেষে ভিক্ষুরা ধর্মপ্রচারে বেরিয়ে পড়বেন। এরপর প্রত্যেক বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত হবে কঠিন চীবরদান।
আষাঢ়ী পূর্ণিমাকে ঘিরে দেশ-বিদেশের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করে থাকে। মহাসাড়ম্বরে রাজধানীর সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার, মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার, আশুলিয়া বৌধিজ্ঞান ভাবনাকেন্দ্র, মিরপুর শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, নওগাঁ, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও সিলেটে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে কাপ্তাইয়ে ভালুকিয়া লুম্বিনী বৌদ্ধ বিহারে সকাল ৬টায় জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় ভিক্ষু সঙ্ঘের প্রাতরাশ, ৯টায় অষ্টশীল গ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সঙ্ঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দান, বেলা ১১টায় ভিক্ষু সঙ্ঘকে পিণ্ডদান এবং উপাসক-উপাসিকা ও অতিথিদের দুপুরের ভোজ।
বিকেল ৩টায় বৌদ্ধ মুর্তি স্ন্যান, ৩টা ৩০ মিনিটে ত্রিপিটক পাঠ, ৪টায় ধর্মীয় সূত্র পাঠ, সাড়ে ৪টা ৪০ মিনিটে সদ্ধর্ম আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ত্রিরত্ন ভিক্ষু এসোশিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও উক্ত বিহারের বিহারাধ্যক্ষ শ্রীমৎ সত্যপ্রিয় স্থবির। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে হাজার বাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে প্রদীপ পূজা ও আলোকসজ্বা, দেশের অগ্রগতি, সমৃদ্ধি, বিশ্ব-শান্তি এবং সমস্ত মানব জাতি তথা প্রাণিজগতের সুখ-শান্তি কামনায় বুদ্ধ-ধর্ম-সঙ্ঘ ত্রিরত্নের কাছে সমবেত প্রার্থনা ও মৈত্রী ভাবনা। এতে উপাসক-উপাসিকা, বৌদ্ধ সাধকগন তথা সাধারণ গৃহী ও যুবক যুবতীরা অংশ নেন।

সোস্যাল নেটওয়ার্ক

সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত